আগরতলা, ২১ ডিসেম্বর: উত্তরপূর্বাঞ্চলে শান্তি বজায়ের পাশাপাশি সাহিত্য, ভাষা ও সংস্কৃতিকে একসাথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কারণ, উত্তরপূর্বাঞ্চলের ভাষা, সংস্কৃতি এবং সাহিত্য দেশের জন্য ঐতিহ্য। আজ উত্তর-পূর্ব পর্ষদের (এনইসি) বৈঠকে একথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। সাথে তিনি যোগ করেন ডোনার মন্ত্রক উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের ভাগ্যরেখা হিসেবে কাজ করছে।
এদিন তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে উত্তরপূর্বাঞ্চলে উন্নয়নের সুর্বণ সুযোগ এসেছে। কারণ, বিগত দিনে কেন্দ্রীয় সরকার শুধু দিল্লিতে বসে উত্তরপূর্বাঞ্চলের জন্য ভাষণ দিয়েছে। কাজের কাছ কিছুই করে নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তরপূর্বাঞ্চলকে উন্নয়নের নতুন দিশায় পৌঁছানের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেছেন। ফলে, এখন সমস্ত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে উত্তর পূর্বাঞ্চল এখন উন্নয়নের পথে হাঁটছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে ৬৫ বার উত্তর পূর্বাঞ্চলের সফর করেছেন এবং প্রত্যেকবার কিছু না কিছু উপহার উত্তর পূর্বাঞ্চলকে দিয়েছেন।
তাঁর কথায়, কেন্দ্রে যখনই বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তখনই উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিগত ১০ বছরে উত্তর পূর্বাঞ্চলে শান্তি স্থাপন হয়েছে। তাছাড়া, এই ১০ বছরে উত্তরপূর্বাঞ্চলকে বিশ্বের দরবারে পর্যটন স্থান হিসেবে তুলে ধরার কাজ হয়েছে। তাছাড়া, এখন পর্যন্ত কেন্দ্র সরকারের সাথে ২০টি শান্তি চুক্তি হয়েছে। ৯ হাজারের বেশি জঙ্গি আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন।
তাঁর কথায়, গত ১০ বছরে উত্তরপূর্বাঞ্চলে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে দিল্লীর সাথে দূরত্ব কমানোর কাজ হয়েছে। তাছাড়া, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্য নিজের নিজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে অনুসরণ ও উদযাপন করে থাকে। তাই গোটা দেশ চাইছে উত্তরপূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্য সমৃদ্ধ হয়। যাতে গোটা উত্তরপূর্বাঞ্চল দেশের উন্নয়ন যোগদান করতে পারে। কারণ, উত্তরপূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের গতি বৃদ্ধির মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ ভারতে সামিল করাই একমাত্র লক্ষ্য বিজেপি সরকারের।
এদিন তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার ক্ষমতায় আসার পর উত্তরপূর্বাঞ্চলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া শুরু হয়েছে। তাছাড়া, উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা যাতে ভাষাকে প্রাধন্য দেওয়া হয় সেই বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এদিন তিনি আরও বলেন, এনইসি গত ৫০ বছর ধরে উত্তরপূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন সমস্যা এবং প্রয়োজনের উপর আলেচনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসাবে তৈরী হয়েছে। তাছাড়া, উত্তর-পূর্ব পর্ষদ (এনইসি) উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের ভাগ্যরেখা হিসেবে কাজ করেছে। তাছাড়া, উত্তরপূর্বাঞ্চলের জনজাতি সম্প্রদায়কে উন্নয়নের ধারায় সামিল করার জন্য কাজ করেছে।
তাঁর কথায়, ভারত সরকার দেশের বিভিন্ন বিনিয়োকারীদের উত্তরপূর্বাঞ্চলে উন্নয়নের ধারায় সামিল হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। কারণ, সবার সম্মিলিত প্রয়াসে বিশ্বের দরবারে উত্তরপূর্বাঞ্চলকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে দিতে হবে। ইতিমধ্যে অসমে টাটা সেমিকন্ডাক্টর এসেম্বলি এন্ড প্রাইভেট লিমিটেড ২৭ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বিনিয়োগ অসমে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হতে যাচ্ছে বলে দাবি তাঁর। উত্তরপূর্বাঞ্চলে উন্নয়নের জন্য বড়ো বড়ো বিনিয়োগ খুবই জরুরি।
তাঁর কথায়, উত্তরপূর্বাঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি স্থাপনের পাশাপাশি সাহিত্য, ভাষা ও সংস্কৃতিকে একসাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ, উত্তরপূর্বাঞ্চলের ভাষা, সংস্কৃতি এবং সাহিত্য দেশের জন্য ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে বজায় রাখতে কেন্দ্র সরকার সমস্ত সুযোগ সুবিধা করবে বলে আশ্বাস্ত করেন তিনি।