আগরতলা, ১৩ ডিসেম্বর : মানসিক রোগের চিকিৎসা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। মানসিক রোগীকে ভাল রাখা ও সুস্থভাবে তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত কঠিন কাজ। তাই মনোরোগ চিকিৎসকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আজ ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ এবং বি আর আম্বেদকর টিচিং হাসপাতালের স্বামী বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটির ত্রিপুরা রাজ্য শাখার ২৫তম বার্ষিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানসিক রোগ প্রতিহত করতে হলে জীবনশৈলীর পরিবর্তন, নেশা থেকে বিরত থাকা এবং নিয়মিত যোগাভ্যাসের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সমাজের সকলস্তরের নাগরিক এবং মানসিক রোগীর অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রয়োজন জনসচেতনতাও। মানসিক রোগীরা সুস্থ হলে সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতার জন্য সমাজেরও দায়িত্ব রয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, হতাশা, উদ্বেগ ও নেশা মানসিক রোগের কারণ। মানসিক রোগীদের চিকিৎসার জন্য নরসিংগড়ে একটি মেন্টাল হেলথ ইন্সস্টিটিউট রয়েছে। সেটাকে কিভাবে আধুনিক ও উন্নত করা যায় সেদিকে রাজ্য সরকারের নজর রয়েছে। এছাড়াও ডোনার মন্ত্রকের সহায়তায় নেশাসক্তদের পুনর্বাসনের জন্য সিপাহীজলার বিশ্রামগঞ্জে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে এখন সফলভাবে প্রায় নিখরচায় কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য বহিরাজ্যের খ্যাতনামা সংস্থা এগিয়ে আসছে। ইতিমধ্যে মনিপুরের সৃজা হসপিটাল রাজ্যে সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল স্থাপনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও বাইরের বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আয়ুষ্মান ভারত-প্রধানমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনা ও মুখ্যমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনা মিলে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার আওতায় দেশের মধ্যে ত্রিপুরা শীর্ষে রয়েছে।
সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রবীণ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এ কে নাথ, ডা. জীবন চক্রবর্তী, ডা. বিমল কৃষ্ণ ভৌমিক, ডা. জ্যোতির্ময় ঘোষ, ডা. সজল গুপ্ত এবং প্রয়াত চিকিৎসক রূপময় ওয়াদেদ্দারের সহধর্মিনীকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. সঞ্জীব দেববর্মা, ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটির পূর্বাঞ্চলের সভাপতি ডা. শ্রী কুমার মুখার্জী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধক দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা দপ্তরের অধিকর্তা অধ্যাপক ডা. এইচ পি শর্মা, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. অরিন্দম দত্ত এবং ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটির ত্রিপুরা রাজ্য শাখার চেয়ারম্যান ডা. দীপায়ন সরকার প্রমুখ। সম্মেলন উপলক্ষে একটি স্মরণিকার আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা।