এপার বাংলায় এসে হাড়হিম হিন্দু নির্যাতনের কথা শোনালেন বাংলাদেশি বৃদ্ধা

রায়গঞ্জ, ১৩ ডিসেম্বর (হি.স.): বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে পদ্মাপারের নারকীয় অত্যাচারের কথা জানালেন বাংলদেশের দিনাজপুরের গাজিপুরের বৃদ্ধা। ভেঙে পড়লেন কান্নায়। বৃহস্পতিবার বৃদ্ধাকে রায়গঞ্জ জেলা আদালতে তোলা হয়। কিন্তু অসহায় বৃদ্ধাকে দেখতে পরিবারের কেউ আসেননি। শুক্রবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।

বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার গাজিপুর থানার যথাইসুদপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা। বয়সের কারণে চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়েছে। সামনের মানুষজনদেরও ঝাপসা দেখেন। বুধবার রাতে কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলার উত্তর দিনাজপুরে প্রবেশের সময় বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

বৃদ্ধা জানান, কয়েকদিন আগে তাঁর ছোট মেয়েকে নিজের চোখের সামনে নির্যাতিত হতে দেখেছেন মৌলবাদীদের হাতে। অত্যাচারের পর তরুণীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। উলটে সশস্ত্র বাহিনী রোজ তাঁকে হুমকি দিত বাড়ি ছাড়ার জন্য। একদিন ভোরে বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে জঙ্গলে মেয়ের দেহ দেখতে পান। চিৎকার করে সবাইকে ডাকলেও

কেউ আসেনি। জঙ্গলেই পড়ে থাকে দেহ।

এর পর বাড়ি থেকে বের করতে বৃদ্ধাকে মারধর করা হয়। টেনে হিঁচড়ে এনে ফেলা হয় রাস্তায়। তার পরই ভারতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি আসার সিদ্ধান্ত নেন বৃদ্ধা। রাতের অন্ধকারে কাঁটাতার পেরনোর সময় ধরা পড়েন বিএসএফের হাতে।

বৃদ্ধা জানান, তিনি পাঁচ কন্যা ও তিনপুত্রের মা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সেপ্টেম্বরের এক সন্ধ্যায় বড় ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় মৌলবাদীরা। তার পর আর খোঁজ নেই তাঁর। আর এক ছেলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনও হদিশ নেই। পাঁচ মেয়ের মধ্যে দুজন না খেতে পেয়ে অসুস্থ হয়ে ঢলে পড়েছে মৃত্যুর কোলে। ছোট মেয়ে মৌলবাদীদের লালসার শিকার।

ধৃত বৃদ্ধাকে রায়গঞ্জ জেলা মূখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। বন্দি হয়ে এপারে থাকতে রাজি, তাও ওপারে ফিরতে চান না বৃদ্ধা।