আগরতলা, ১১ ডিসেম্বর : বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘু আক্রান্ত ও সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে আগরতলায় বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। এরই প্রতিবাদে বাংলাদেশ নেশালিস্ট পার্টি (বিএনপি)-র তিন সহযোগী সংগঠন যুব দল,স্বেচ্ছা সেবক দল ও ছাত্র দলের কর্মীরা আজ ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে লং মার্চের অংশ নিয়েছেন।
এদিন নয়াপল্টন থেকে ভারতীয় সময় ১০টা নাগাদ আখাউড়ার উদ্দেশ্যে ওই লং মার্চ যাত্রা শুরু করেছে। বিএনপি-র তিন সহযোগী সংগঠনের লং মার্চকে ঘিরে আগরতলায় আখাউড়া ইন্ট্রিগ্রেটেড চেকপোস্ট চত্বরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না জানিয়েছেন, প্রায় ২ সহস্রাধিক গাড়িতে চড়ে আখাউড়া উদ্দ্যেশে আমরা রওয়ানা দিয়েছি। বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে নয়টার কিছু পরে নয়াপল্টনস্থিত বিএনপির মুখ্য কার্যালয় সম্মুখ থেকে লং মার্চ শুরু হয়েছে।
এদিন এই লং মার্চটি ঘিরে আখাউড়া বাংলাদেশের অংশে টানটান উত্তেজনা রয়েছে। বিএনপি ও তার সহযোগী দলের কর্মীরা আখাউড়ায় সমস্ত ব্যবসায়ীদের দোকানপাট বন্ধ রেখে লং মার্চে অংশ নেওয়া হুলিয়া জারি করেছিলেন। অবশ্য, ওই অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা ওই হুলিয়া পাত্তা দেন নি। ফলে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এদিন স্বাভাবিক ছিল।
আগরতলায় আমদানি রপ্তানিকারক বিময় রায় জানিয়েছেন, ওপারে লং মার্চকে ঘিরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রায়ই স্বাভাবিক ছিল। তেমনি, দুই দেশের নাগরিকদের যাতায়াতও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে, বেলা দুইটার পর বাংলাদেশের যাতায়াত এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ওই লং মার্চ দুপুর দুইটা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে আখাউড়ায় পৌঁছাবে। ফলে, নিরাপত্তার প্রশ্নে দুপুর দুইটার আগেই যাত্রী পারাপার ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এদিনের মতো সমাপ্ত হয়ে যাবে।
তিনি জানান, আজ বাংলাদেশ থেকে ১২ গাড়ি মাছ, ৬ গাড়ি প্লাস্টিক এবং দুই গাড়ি শুকনো মাছ আমদানি হয়েছে। গতকাল অবশ্য আজকের তুলনায় কিছুটা বেশি সামগ্রী আমদানি করা সম্ভব হয়ে ছিল। তিনি জানান, গতকাল মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে ৩ গাড়ি সিমেন্ট, ২২ গাড়ি মাছ ও দুই গাড়ি প্লাস্টিক আমদানি করা হয়েছিল।
এদিকে, ওই লং মার্চকে ঘিরে আগরতলায় আখাউড়া সীমান্তে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। বিএসএফ জওয়ান, পুলিশ ও টিএসআর জওয়ান পর্যাপ্ত সংখ্যায় আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও বাড়তি নিরাপত্তার প্রশ্নে ত্রিপুরা পুলিশ জল কামানের ব্যবস্থা রেখেছে। আখাউড়া সীমান্ত থেকে আগরতলা অভিমুখে যাওয়ার রাস্তায় কয়েকদিন আগেই ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল। আজ ওই লং মার্চকে ঘিরে ব্যারিকেডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপার কিরণ কুমার কে এদিন আখাউড়া সীমান্ত এলাকা সহ পার্শ্ববতী এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছেন। তিনি জানান, আখাউড়া সীমান্তে পর্যাপ্ত বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন রয়েছেন। এছাড়াও, পুলিশ ও টিএসআর জওয়ান নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। তাঁর দাবি , আগরতলায় উত্তর পূর্বাঞ্চল কাউন্সিলে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তাই বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রশ্নেই সমস্ত আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে, আখাউড়া সীমান্ত লাগুয়া এলাকার বাসিন্দারা মিষ্টির প্যাকেট হাতে নিয়ে লং মার্চের অপেক্ষা করছেন। তাঁদের বক্তব্য, ভারতবর্ষ সুস্বাদু মিষ্টির জন্য প্রসিদ্ধ। তাই ওই লং মার্চের অংশগ্রহণকারীদের মিষ্টি মুখ করিয়ে স্বাগত জানানো হবে।