ঢাকা, ৯ ডিসেম্বর : বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক আমরা অতীতে যেমন দেখেছি, ভবিষ্যতেও তেমনই দেখতে চাইছি। সোমবার বিকেলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিক বার্তায় একথা বলেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। সাথে তিনি যোগ করেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং উন্নয়ন ভারত চাইছে।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, নতুন সরকারের সঙ্গে এটা প্রথম বিদেশ সচিব স্তরের বৈঠক। আমাদের মধ্যে খোলামেলা এবং গঠনমূলক মতবিনিময় হয়েছে। আমাদের আকাঙ্ক্ষা হলো- ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক ও লাভজনক সম্পর্ক, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আমরা অতীতে যেমন দেখেছি এবং ভবিষ্যতেও তেমনই দেখতে চাই।
এদিন তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত গভীরভাবে কাজ করতে চাইছে। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি আলোচনা হয়েছে। সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারত উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তাঁর কথায়, সংখ্যালঘু বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং উন্নয়ন ভারত চাইছে। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক স্বার্থনির্ভর সম্পর্ক চায় ভারত। আমাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং কূটনৈতিক সম্পত্তির ওপর আক্রমণের মতো সাম্প্রতিক দুঃখজনক কিছু ঘটনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত আশা করে, সম্পর্ক বেগবান করতে বাংলাদেশ ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে বিষয়গুলো দেখবে।
বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ভারত আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রীই প্রথম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আজকের বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভারত চায় দুই দেশের মধ্যে ইতিবাচক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সম্পর্ক। অতীতেও আমাদের সেই সম্পর্ক ছিল, সেটি ভবিষ্যতেও আমরা অব্যাহত রাখতে চাই। এই সম্পর্ক জনগণকেন্দ্রিক, যা সবার জন্য কল্যাণকর। এসময় তিনি দুই দেশের মধ্যে পর্যটন, বাণিজ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, জল, শক্তি এবং ব্যবসাক্ষেত্র যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো দূর করতে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিন সকাল ৮টা নাগাদ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে ঢাকায় আসেন ভারতের বিদেশ সচিব। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এটিই হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক।