আগরতলা/নয়াদিল্লী, ২২ নভেম্বর : ত্রিপুরা সফরে আসা কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তোখন সাহু আজ খোয়াই জেলায় ভারত সরকারের উদ্যোগে গৃহীত বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে জেলা পর্যায়ের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খোয়াই জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলাশাসক সজু ওয়াহিদ, অতিরিক্ত জেলাশাসক অভিজিৎ চক্রবর্তী ও সুমিত কুমার পান্ডে, জেলার দুই মহকুমার মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলার সমস্ত সরকারি দপ্তরের আধিকারিকরা। এই পর্যালোচনা বৈঠকে কেন্দ্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জন কল্যানমুলক প্রকল্প গুলোর বাস্তবায়ন কতটা হয়েছে তার খোঁজখবর নেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। যে সমস্ত প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়া হয়েছিল সেগুলোর কাজ কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং কী কী ঘাটতি রয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় ওই বৈঠকে।
এই সফর ও পর্যালোচনা বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, তাঁর এই সফর নারী ক্ষমতায়নের গুরুত্ব এবং আরও স্থিতিস্থাপক ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে স্বনির্ভরতার রূপান্তরমূলক প্রভাবের একটি শক্তিশালী অনুস্মারক হিসাবে কাজ করছে৷
তিনি এদিন দীনদয়াল উপাধ্যায় ন্যাশনাল আরবান লাইভলিহুড মিশনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত বৃদ্ধাশ্রম পরিদর্শন করেন এবং সেখানকার আবাসিক দুঃস্থ মহিলাদের সাথে অর্থবহ আলোচনা করে তাঁর এই সফর শুরু করেন। তাঁদের কল্যাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির কথা মন্ত্রী তাদের সামনে তুলে ধরেন এবং তাদের জন্য সরকারি সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন৷
প্রতিমন্ত্রী শ্রী সাহু ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পরিদর্শন করেন এবং বিএসএফ সদস্যদের সাথে সাক্ষাত করে জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি তাদের অবদানের স্বীকৃতি ও প্রশংসা করেছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই সফরের অন্যতম আকর্ষণ ছিল গৃহ প্রবেশ অনুষ্ঠান, যেখানে স্থানীয় আধিকারিক ও বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (শহরাঞ্চল) প্রকল্পে প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের গৃহপ্রবেশের ফিতা কাটেন তিনি। ঐতিহ্যবাহী শঙ্খ বাজিয়ে ও ফুল দিয়ে মন্ত্রীকে এদিন উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরণ করে নেন সুবিধাভোগীরা৷
নবনির্মিত খোয়াই বাসস্ট্যান্ডে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের দ্বারা আয়োজিত একটি প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করেন তিনি। নারীরা সেখানে তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার রূপান্তরমূলক অগ্রগতি তুলে ধরেছেন এবং কীভাবে সরকারি সহায়তা তাদের চাকরিপ্রার্থীর পরিবর্তে চাকরি সৃষ্টিকারী হওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে তা তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, “খোয়াই বাসস্ট্যান্ডে বসে আমি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কাছ থেকে শুনেছি কীভাবে ভারত সরকার তাঁদের আত্মনির্ভর হতে সাহায্য করেছে এবং কিভাবে এখন তাঁরা কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী ভগিনী হিসেবে পরিণত হয়েছেন”। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাদের আন্তরিক প্রশংসা তাদের জীবনে যে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে একেই তুলে ধরেছে৷
সফরের শেষ পর্যায়ে, মন্ত্রী স্বচ্ছ ভারত মিশনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কঠিন বর্জ্যের তৃতীয় পর্যায়ের কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন, এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর যেসব বোনেরা এটি পরিচালনা করছেন এবং মেশিনের মাধ্যমে প্লাস্টিক বর্জ্য এবং জৈব বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে অতিরিক্ত আয় উপার্জন করছেন, তিনি তাঁদের সাথে মতবিনিময় করেন।
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ তিনি লিখেছেন, খোয়াই জেলার এই সফরকালে ত্রিপুরার সামাজিক কল্যাণ এবং স্থানীয় উদ্যোগকে আরও জোরদার করার বিষয়ে সরকারের দৃঢ় মনোভাব এবং প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন লক্ষ্য করা গিয়েছে। তদুপরি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উদ্ভাবনী নেতৃত্ব এবং উদ্যোগে অনুপ্রাণিত সম্প্রদায়ের বোনদের ক্ষমতা এবং স্বনির্ভরতার গল্প শুনে অনুপ্রাণিত হয়েছি। নারীরা তাদের উদ্যোক্তা মনোভাব, নেতৃত্ব এবং দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে তাদের পরিবার ও সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।”