নিজস্ব প্রতিনিধি, কমলপুর, ২৯ অক্টোবর: দরিদ্রতার সাথে লড়াই করে লক্ষ্মী রানী সিনহা সারা ভারত বর্ষের মধ্যে অনূর্ধ্ব ১৭ ব্যাল্ট রেসলিং,প্যাঙক্রেশন ও মাচ রেসলিং এই তিনটি ইভেন্টে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে গর্বিত করেছে কমলপুর সহ রাজ্যকে। আগামী দিন আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ করতে পারবে তো ? এই চিন্তায় মগ্ন কোচ সহ ফেডারেশনের কর্মকর্তারা।
রূপসপুর এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ সিনহা। স্ত্রী সহ দুই মেয়ে চার জনের সংসার। লক্ষ্মী রানী সিনহা বড়। স্ত্রী কল্যানী সিনহা সংসার দেখছেন। প্রচন্ড দরিদ্রতার মধ্যে দিয়ে চলছে চার জনের সংসার। লক্ষ্মী রানী সিনহা পড়াশোনার পাশাপাশি প্যাঙক্রেশন রেসলিং, ব্যাল্ট রেসলিং ও মাচ রেসলিং ইভেন্ট গুলিতে কোচিং নেয় কোচ আম্বর আলীর কাছ থেকে। টানা চার বছর কোচিং নেওয়ার পর মহকুমা,জেলা ও রাজ্যে ওই ইভেন্ট গুলিতে চ্যাম্পিয়ন হয়।
পরবর্তীতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে জাতীয় স্তরে অংশ গ্রহন করে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বর্নপদক লাভ করে লক্ষ্মী রানী সিনহা। ইতিমধ্যে দেরাদুন, উত্তরাখণ্ড সহ অন্য রাজ্যে ব্যাল্ট রেসলিং, প্যাঙক্রেশন ও মাচ রেসলিং এই তিনটি ইভেন্টে পর পর চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বর্ন পদক লাভ করে। যা ত্রিপুরার নজির। এতে গর্বিত কমলপুর সহ ত্রিপুরাবাসী। লক্ষ্মী রানী সিনহা আন্তর্জাতিক এই ইভেন্ট গুলিতে খেলায় সিলেকশন হয়েছে। কিন্তু, খরচ চালাবে কে ? এই চিন্তায় ঘোরপাক খাচ্ছে কোচ আম্বর আলী সহ সংস্থার ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের।
মা কল্যাণী সিনহা কেঁদে বলেন, খুব কষ্ট করে সংসার প্রতিপালনের মাধ্যমে আমার মেয়েকে এই জায়গায় এনেছি। এরজন্য কোচ অনেক সাহায্য করেছে। আমার মেয়ে কমলপুরের মান রেখেছে। আরো এগিয়ে যাওয়ার জন্য সবার সাহায্য চাই। আমরা গরীব। আমি মেয়েকে পড়াশুনা করাতে চাই। কোচ আম্বর আলী বলেন, গত চার বছর ধরে লক্ষ্মী রানী সিনহা ট্রেডিশন্যাল রেসলিং অ্যান্ড প্যাঙক্রেশনের বিভিন্ন ইভেন্টে কোচিং করি। কোচিংয়ের প্রথম থেকে তার মধ্যে প্রতিভা লক্ষ্য করা গেছে।
এরপর রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে হরিয়ানা, পাঞ্জাব সহ বিভিন্ন রাজ্যে জাতীয় স্তরে স্বর্ন পদক পায়। এরজন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, ক্রীড়া মন্ত্রী সহ বিভিন্ন পদাধিকারীরা আমাদের সাহায্য করেন। লক্ষ্মী রানী সিনহার পারফরম্যান্সের জন্য মাদ্রাসা দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের শিক্ষক,শিক্ষিকা গর্বিত প্রকাশ করেন। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা বলেন, আমরা গর্বিত লক্ষ্মী রানী সিনহা পর পর তিনটি ইভেন্টে স্বর্ন পদক লাভ করে। এখন সরকার তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় কিনা সেটাই প্রশ্ন।