নয়াদিল্লি, ২৩ অক্টোবর (হি. স.) : সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থাই ভারতের অগ্রাধিকার। রাশিয়ার কাজানে চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে একথা স্পষ্ট করে দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সূত্রের খবর, গত প্রায় ৫ বছর ধরে ভারত-চিন সীমান্তের পূর্ব লাদাখ সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা কাম্য নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে পূর্ব লাদাখে সীমান্তে টহলদারি নিয়ে সম্প্রতি যে চুক্তি হয়েছে তাকেও স্বাগত জানিয়েছেন মোদী।
বৈঠক চলাকালীন মোদী ভারত ও চিনের সম্পর্কের গুরুত্ব স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি ভারত-চিনের মধ্যে সুসম্পর্ক শুধু দুই দেশের মানুষের জন্য জরুরি তাই নয়, বরং বিশ্বশান্তি, স্থিতাবস্থা ও উন্নয়নের জন্যও প্রয়োজনীয়।’ মোদীর কথায়, ‘পারস্পরিক বিশ্বাস, সম্মান, ও স্পর্শকাতরতা দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি।’
মোদী জিনপিং বৈঠকের পর বিদেশমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদী ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে আলোচনা ভারত চিন সম্পর্ক বিশেষ করে দুই দেশের সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়গুলিতেই সীমাবদ্ধ ছিল। এছাড়াও দুই দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করা নিয়েও বৈঠকে কথা হয়। দুই দেশই বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকের মাধ্যমে সহযোগিতা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনায় একমত হয়েছে।
বুধবার বিকেলে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগে ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর ভারতের মামাল্লাপুরমে দুই রাষ্ট্রনেতার শেষ বৈঠক হয়। তাতেও যথেষ্ট হৃদ্যতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ ছবি ধরা পড়লেও পরে পরিস্থিতি বদলে যায়। এর মধ্যে গত ৫ বছরে ঘটে গিয়েছে গালওয়ান সংঘর্ষের ঘটনা। যা দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কে গুরুতর প্রভাব ফেলে।
তবে গত কয়েকদিন ধরেই ভারত চিন সম্পর্কের উন্নতির খবর মিলছিল। পূর্ব লাদাখ সীমান্তে টহলদারি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত মিটে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি জানান, ২০২০ সালের এপ্রিল-মে থেকে যে সংঘাত শুরু হয়েছিল, তাতে অবসান ঘটিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টহলদারির সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছেছে নয়াদিল্লি এবং বেজিং। অর্থাৎ ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চিন যেখানে টহলদারি চালাত সেই অবস্থানে ফিরে যাওয়া হচ্ছে বলে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। এরপরই রাশিয়ায় মোদী-জিনপিং বৈঠকের সূচি ঠিক হয়। সেখানে ভারতের অবস্থান আরও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদী।