BRAKING NEWS

আগামীকাল ফুটবল সম্রাট পেলের জন্মদিন

কলকাতা, ২২ অক্টোবর (হি.স.): বিশ্ব ফুটবলের সম্রাট পেলে। তাকে বলা হয় লিজেন্ডদের লিজেন্ড। ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিল ও ফুটবল বিশ্ব আলোকিত করতে দুনিয়ায় আগমন হয়েছিল এই ফুটবল নক্ষত্রের। ৮২ বছরে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন ফুটবলের রাজা, কিংবদন্তী পেলে, ১৯২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর।এই মহাতারকার ক্যারিয়ার সফলতায় ভরা। তার সাফল্যে ব্রাজিল এক সময় ছিল অপ্রতিরোধ্য। ব্রাজিলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা এখনও তিনি। ব্রাজিলের হয়ে জিতেছেন তিন তিনটি বিশ্বকাপ। তার সময়ে পরপর দুটো বিশ্বকাপ জেতা একমাত্র দলও ছিল  ব্রাজিল। তিনি ৫৮ এবং ৬২তে টানা দুইবার বিশ্বকাপ জেতার পর আরেকটি জিতেছিলেন ১৯৭০ সালে।

ব্রাজিলের হয়ে পেলের গোল সংখ্যা ৯৫টি। এই ফুটবল সম্রাটের ক্যারিয়ারে হ্যাটট্রিক রয়েছে ৯২টি। যা বিশ্বের কোন কিংবদন্তি ফুটবলারের নেই! ফুটবল ক্যারিয়ারে অফিসিয়াল ও আনঅফিসিয়াল এই দুই মিলিয়ে তার গোল সংখ্যা ১৩৬৩ ম্যাচে ১২৮১ গোল।

ফিফা বিশ্বকাপে এই মহাতারকার পরিসংখ্যান দারুন উজ্জ্বল। বিশ্বকাপে তার গোল রয়েছে ১২টি। তার মধ্যে ১৯৫৮ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েলসের বিরুদ্ধে তারই গোলে জিতেছিল ব্রাজিল। সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে করেছিলেন হ্যাটট্রিক এবং ফাইনালে সুইডেনের বিরুদ্ধে রয়েছে তার জোড়া গোল। এছাড়া ১৯৭০ বিশ্বকাপে ফাইনালে ইতালির বিপক্ষেও গোল করেছিলেন তিনি।

ফুটবল কিংবদন্তি পেলের জানা-অজানা কিছু তথ্য:

৫০ বছর বয়সে ব্রাজিলের অধিনায়ক:

ক্লাব ও দেশের জার্সিতে পেলেকে যখনই তাকে অধিনায়কত্ব গ্রহণ কথা বলা হয়েছে, ততবারই তিনি  প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে এই ঘটনার ব্যতিক্রম ১৯৯০ সালে। জাতীয় ফুটবল থেকে অবসর নেয়ার ১৯ বছর পরে। সেই বছর ব্রাজিলের সঙ্গে বাকি বিশ্বের একটি প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল মিলানে। সেই ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন পেলে। মূলত ফুটবল কিংবদন্তির ৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সেই ম্যাচের আয়োজন হয়েছিল। সেই ম্যাচে তিনি অধিনায়ক হয়েছিলেন।

মাঠ থেকে ‘বহিষ্কার’:এই ঘটনাটি ঘটে ১৯৬৮ সালের ১৮ জুন। কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতায় এক প্রীতি ম্যাচে কলম্বিয়ান অলিম্পিক স্কোয়াডের মুখোমুখি হয়েছিল পেলের ক্লাব সান্তোস এফসি। সেই ম্যাচে কলম্বিয়ার একজন ডিফেন্ডারকে ফাউল করা ও প্রতিপক্ষ সেই ফুটবলারকে অপমান করার জেরে পেলেকে মাঠ থেকে চলে যেতে বলা হয়।

ফুটবল সম্রাটকে ‘অপহরণ’:বড় ধরনের অশান্তি চলমান অবস্থায় ১৯৭২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোতে খেলতে যান সান্তোস এফসি ক্লাবের হয়ে। সেদিনের খেলায় ৪৩ মিনিটে গোল করে বসেন পেলে। ব্যাস এখানেই বাধে বিপত্তি। খেলা শেষ হওয়া মাত্রই পোর্ট অব স্পেন স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে থাকা সমর্থকরা মাঠের ভেতরে চলে আসে ও পেলেকে কাঁধে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে চলে যায় । সেখান থেকে পেলেকে উদ্ধার করে আনতে বেশ কিছু সময় লেগেছিল।

ইউরোপীয় কোনও ক্লাবে কেন খেলেননি পেলে:ব্রাজিলের অন্যান্য ফুটবলাররা বিদেশি ক্লাবে খেললেও পেলেকে ব্রাজিলে রেখে দেয়ার জন্য সেই সময় চাপ দেয়া হত সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেও। ১৯৬১ সালে ব্রাজিলের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জানিও কোয়াদ্রস পেলেকে ‘জাতীয় সম্পদ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তাকে ‘রফতানি করা যাবে না’ বলে একটি বিজ্ঞাপন জারি করেছিলেন। তবে সেলেসাওদের এই ফুটবলার পরে একটি বিদেশি ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন। তা শুধু ১৯৭৫ সালে। সেই সময় তিনি যোগ দেন আমেরিকার ফুটবল ক্লাব নিউইয়র্ক কসমসে।

পেলে ভালো গোলরক্ষকও:পেলে ছিলেন ক্লাব ও দেশের বিকল্প গোলরক্ষক। আসল গোলরক্ষক আহত হলে তার জায়গায় তিনি নামতেন। পুরো ক্যারিয়ারে সান্তোস এফসি ক্লাবের হয়ে চারবার গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ১৯৬৪ সালে ব্রাজিলিয়ান কাপের সেমিফাইনালেও তাকে গোলকিপার হতে দেখা গিয়েছিল।

পেলের সিনেমায় অভিনয়:‘এসকেপ টু ভিক্টরি’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন পেলে। ১৯৮১ সালে মুক্তি পায় ছবিটি। সেই সিনেমায় দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়ের নাৎসি একাদশ ও বন্দীদের মধ্যে একটি কাল্পনিক ফুটবল ম্যাচের গল্প তুলে ধরা হয়েছিল। সেই ছবিতে পেলের সঙ্গে ছিলেন ববি মুরের মতো আরও কয়েকজন পেশাদার ও প্রাক্তন ফুটবলারও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *