BRAKING NEWS

নারী নির্যাতন, আইন শৃঙ্খলা, দূর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধি সহ একাধিক ইস্যুতে শাসক দল বিজেপি এবং ত্রিপুরা সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় বিঁধলেন মানিক সরকার, জিতেন্দ্র চৌধুরী

আগরতলা, ৩ অক্টোবর : ত্রিপুরায় শারদোৎসবকে ঘিরে উন্মাদনার মাঝে রাজনীতির পারদ চড়ালো সিপিএম। আগরতলায় প্রতিবাদ মিছিল শেষে পথসভায় নারী নির্যাতন, আইন শৃঙ্খলা, দূর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধি সহ একাধিক ইস্যুতে শাসক দল বিজেপি এবং ত্রিপুরা সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় বিঁধলেন মানিক সরকার, জিতেন্দ্র চৌধুরীরা। তাঁদের দাবি, ত্রিপুরার মানুষের দূর্দশার জন্য বিজেপি দায়ী।

আজ পথসভায় পুরনো খুনের মামলায় পুনরায় তদন্ত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম  পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার। তাঁর কথায়, পুরনো খুনের মামলার তদন্ত করতে কেউ আপত্তি করেনি। আইন মেনে তদন্ত করুন। জনগণও চায় পুনরায় তদন্ত করে সত্যের মুখোমুখি হতে। আসলে মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে বিভ্রান্ত করতে জনসম্মুখে আবোল তাবোল বলছেন, কটাক্ষ করেন মানিক সরকার। 

এদিন তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত রাজ্যের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিভিন্ন জায়গায় নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু তদন্ত করে দেখা যাচ্ছে ওই ঘটনায় শাসক দলের একাংশ জড়িত রয়েছেন। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবিষয়ে তাঁর কাছে সমস্ত তথ্য থাকলেও নীরব ভূমিকা পালন করছেন। কারণ, তিনি নিজের পিঠ বাঁচাতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু জনগণ নিজেদের ভুল বুঝতে পড়েছেন। তাই নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগনকে সম্মিলিতভাবে যুদ্ধে এগিয়ে আসতে হবে।

তাঁর অভিযোগ, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। জনগণকে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। ভোট প্রদান করতে আসলে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল জনগণকে। তারপর শাসক দল বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতিকারীরা বিরোধীদলের কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছিল। সিপিএমের প্রার্থীদের মনোনয়ন দাখিলে বাধা দিয়েছিল। ফলে সিপিএমের একাধিক কর্মী আহত ও একজন নিহতও হয়েছিলেন। তাতেই স্পষ্ট রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা তলানিতে ঠেকেছে।

তাঁর অভিযোগ, নির্বাচনের পূর্বেই রাজ্যের প্রায় ৭১ শতাংশ আসনে বিজেপি মনোনীত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন। তারপরও ভোট গ্রহণের দিন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভোটারদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তেমনি, ভোট গণনার দিনও শাসক দলের আশ্রিত দুষ্কৃতিকারীরা রাজ্যের সন্ত্রাসের বাতাবরণ কায়েম করে রেখেছিলেন। বিভিন্ন ব্লকের গণনা কেন্দ্রে বিরোধীদলের কর্মীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় নি। 

এদিন তিনি আরো বলেন, রাজ্যে টাকার বিনিময়ে সরকার চাকুরী প্রদান করছে। সরকারী চাকুরিতে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বহিরাজ্যের যুবকরা বাঁকা পথে পিআরটিসির সের্টিফিকেট নিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেই নি। তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বেকার সমস্যা সুরাহের জনি জনগনকে একত্রে লড়াই করতে হবে। তাছাড়া, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। পুলিশ নিরব ভূমিকা নিচ্ছে।

তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় সিপিএমের রাজত্বকালে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে নি। শুধু সমস্যা তৈরী করেছিল সন্ত্রাসবাদীরা। তাঁদের আক্রমনের শিকার হয়েছিলেন বহু মন্ত্রী, বিধায়ক এবং নিরীহ জনগন। আশ্চর্যের বিষয়, তত্কালীন সরকার চলে যাওয়ার পর ত্রিপুরায় সন্ত্রাসবাদীরা আক্রমণ করে নি। কিন্তু দশ বছরের ব্যবধানে শত শত সন্ত্রাসবাদী আত্মসমর্পণ করেছে। এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তদন্ত করা দরকার।

এদিন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, রাজ্যবাসী বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। একাধিক অপরাধের সাথে শাসক দলের কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। যখন পুলিশ এবিষয়ে জানতে পারে তখন একদম ও তাঁদের তদন্ত প্রক্রিয়া এগোতে পারে না। তাঁর অভিযোগ, অপরাধীদের দ্বারা বিজেপি সরকার ত্রিপুরায় ক্ষমতায় রয়েছে। তাই বিভিন্ন কর্মকান্ডে অপরাধীদের ধরার সেই উদ্যোগ নেই। রাজ্যে শুধু আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিঘ্ন হচ্ছে না, অর্থনৈতিক দিক দিয়েও অবনতিও হচ্ছে। তাই অপশাসনের হাত থেকে রাজ্যকে বাঁচাতে জনগণকে একত্রে লড়াই করতে হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *