উমরাংসোতে নতুন সিমেন্ট উদ্যোগের জন্য জমি দেবেন না তিন গ্রামের বাসিন্দারা

হাফলং (অসম), ১১ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : ডিমা হাসাও জেলার উদ্যোগনগরী হিসেবে পরিচিত উমরাংসোতে নতুন সিমেন্ট উদ্যোগ স্থাপনের জন্য বড় লকিংডো, নবডিলংকিংক্রো, ছোট লংকিংক্রো গ্রামে জমি বণ্টনকে কেন্দ্র করে তিনটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

ওই তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা নতুন সিমেন্ট উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করে সিমেন্ট উদ্যোগের জন্য জমি ছেড়ে দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। গ্রামবাসীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রাণ গেলেও তাঁরা কোনও অবস্থায় জমি ছাড়বেন না।

গত সোমবার উমরাংসোতে নতুন সিমেন্ট উদ্যোগ স্থাপনের জন্য দিল্লি থেকে সংশ্লিষ্ট সিমেন্ট কোম্পানির এক সার্ভে টিম উপস্থিত হয়েছিল। তাঁরা ওই তিনটি গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে জমি বণ্টন নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য দেবোলাল গার্লোসাও উপস্থিত ছিলেন। আলোচনাকালে গ্রামবাসীরা তাঁদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সিমেন্ট উদ্যোগের জন্য তাঁরা কোনও অবস্থায় জমি ছাড়বেন না। জমি নিতে হলে প্রথমে গ্রামবাসীদের মেরে ফেলতে হবে বলে জানিয়ে দেন তিন গ্রামের বাসিন্দারা।

তাঁদের অভিযোগ, গ্রামবাসীদের মতামত না নিয়েই সিমেন্ট উদ্যোগ স্থাপনের জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। এদিকে বুধবার কার্বি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনও ওই তিনটি গ্রামে মাইনিংয়ের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের নিয়ে গঠিত কমিটি এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বড় লোকিংডো গ্রামের সাতটি গ্রামের প্রায় নয় হাজার বিঘা জমি এবং নবডিলোংকিংক্রো ও ছোট লাংলিংক্রো গ্রামের দুই হাজার বিঘা জমি গ্রামবাসীদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই বণ্টন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে নিলসো রংহাং বলেন, তাঁরা উন্নয়নের বিরোধী নন। তবে ওই তিনটি গ্রামে নতুন উদ্যোগ স্থাপনের বিরোধিতা করে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, স্থানীয় বিধায়ক, উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহীকে স্মারকপত্র প্রদান করেছেন। এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তাই এখন তাঁরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, আইনের পথে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন।

নিলসো রংহাং বলেন, নতুন সিমেন্ট উদ্যোগ স্থাপন হলে পরিবেশ দূষিত হবে, যা মানুষের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়াবে। কারণ উমরাংসো অসমের একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রস্থল। তিনি বলেন, ওই তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা কৃষির ওপর নির্ভরশীল। জুম খেত করেই জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা। এমতাবস্থায় গ্রামবাসীদের জমি এভাবে কেড়ে নিলে তাঁরা কোথায় যাবেন?

রংহাং বলেন, ১৯৭৬ সালে নিপকো-র জন্য তাঁরা জমি ছেড়ে দিয়ে এখানে বসতি স্থাপন করেন। এখন সিমেন্ট উদ্যোগ স্থাপনের নামে তাঁদের বিতারিত করা হলে ভুক্তভোগীদের অবস্থা কী হবে? তাই গ্রামবাসীরা কোনও অবস্থায় নতুন সিমেন্ট উদ্যোগ স্থাপনের জন্য জমি দেবেন না বলে সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন নিলসো রংহাংও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *