নিজস্ব প্রতিনিধি, কৈলাসহর, ২৩ আগস্ট: ভয়াবহ বন্যায় ত্রিপুরায় দুর্বিসহ অবস্থা মানুষের। কৃষি ক্ষেত্রেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঊনকোটি জেলার ফটিকরায়ের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার জলের তলায় সব্জি থেকে ধান সবকিছু। মাথায় হাত কৃষকদের। সরকারী সহায়তার দাবী তুলছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
হঠাৎই রুদ্ররূপ দেখালো প্রকৃতি। ত্রিপুরার দিকে দিকে এখন শুধু দুর্গতদের আর্তনাদ। ভাদ্র মাসের অকাল বন্যায় ত্রিপুরার একাধিক জেলায় সর্বশান্ত বহু মানুষ। বন্যার জলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বাড়ীঘর থেকে কৃষিজমি সবকিছুই।রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের সাথে ঊনকোটি জেলাতেও বন্যার তাণ্ডবে ঘরছাড়া অনেক মানুষ। ভয়াবহ প্লাবনে ব্যাপক ক্ষয়খতি কৃষিক্ষেত্রে।
ফটিকরায় বিধানসভার দিকে দিকে নষ্ট নিম্নাঞ্চলের জমিতে থাকা ধান থেকে বিভিন্ন সব্জি। সংশ্লিষ্ট বিধানসভা এলাকার ইন্দিরা কলোনি, কৃষ্ণনগর, আসামবস্তি, রাতাছড়া সহ একাধিক অঞ্চলের মানুষ কৃষিকাজের উপরই নির্বাহ করেন তাদের জীবন জিবিকা। কিন্তু চলতি বন্যায় একেবারে মাথায় হাত পড়েছে সেইসব কৃষক পরিবারগুলোর। বন্যার জলের নিচে চলে গিয়েছে তাদের ফলানো বিভিন্ন সব্জি থেকে ধান সবকিছুই। বর্তমানে এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বহু অঞ্চলেই কৃষকদের ফসল এখনো রয়েগেছে জলের নিচেই।
রাতাছড়া লামারগাও এলাকার কৃষক পিঙ্কু দাস জানিয়েছেন, এলাকার অধিকাংশ পরিবারই সেখানে কৃষির উপর নির্ভর। চলতি বন্যা সর্বনাশ করে দিয়েছে তাদের ফলানো বিভিন্ন ফসল থেকে ধানের। আগামীদিনে পরিবার নিয়ে কিভাবে খেয়ে বাঁচবেন তারা তানিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন ঐ কৃষক। তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের বন্যায় একইভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিলো তাদেরকে। তখনও সরকারী সহায়তা সঠিকমতো পাননি ঐ এলাকার প্রত্যেক কৃষক। এবারের বন্যায় সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে না দাঁড়ালে তাদের পক্ষে পরিবার প্রতিপালন করাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তাই অবিলম্বে সরকার তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক চাইছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। সব জমি থেকে এখনো নামেনি জল।
কৃষকদের ফলানো লাউ,কুমড়ো,ঢেড়স,বেগুন, ঝিঙে সহ অন্যান্য সব্জি ও ধান এখনো জলের তলায়। ইতিমধ্যেই পচন ধরতে শুরু করেছে বিভিন্ন ফসলে। তাই জমির কোন ফসলই আর রক্ষাকরা যাবেনা বলে হতাশার সুরে জানালেন এলাকার কৃষক অসিত দত্ত।ফসল বাজারজাত করাতো দূরস্ত কৃষক পরিবারের নিজেদের খেয়ে বাঁচার ধান বা সব্জিটুকু পর্যন্ত রক্ষা হয়নি এযাত্রায়। এই পরিস্থিতিতে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই স্থানীয় বাজারে এর প্রভাব পড়বে এবং দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য আকাশছোঁয়া হবে বলেই আশঙ্কা ব্যাক্ত করেছেন কৃষকরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যসরকার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে কতটুকু সহায়তার হাত বাড়ায় তাই এখন দেখার।