অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে শিশু ও মায়েদের পুষ্টিকর খাবার সামগ্রী ক্রয়ের জন্য অর্থের যোগান দিচ্ছে না সরকার, অভিযোগ 

আগরতলা, ৩ আগস্ট: দ্রব্যমূল্য লাগামহীন ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে শিশু ও মায়েদের পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সংহতি দেখে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গুলির শিশু ও মায়েদের পুষ্টিকর খাবার সামগ্রী ক্রয়ের জন্য অর্থের যোগান দিচ্ছে না সরকার। ফলে জটিল সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা।

গুণগত মান সম্পন্ন খাদ্য সামগ্রী শিশু মায়েদের মধ্যে সরবরাহ করতে পারছেন না তারা। এমনই অভিযোগ উঠে এলো খোদ কুমারঘাট মহকুমার সিডিপিও হরিপদ দেবনাথের বক্তব্য থেকে।

রাজ্যের অনেক অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রেই প্রতিদিন শিশুদের যে খাবার খাওয়ানো হয় তা গুনগত মান সম্পন্ন নয় এবং সঠিকমতো খাবারও দেওয়া হয়না বলে অভিযোগ একাংশ অবিভাবকদের।

 ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট মহকুমার একাংশ অঙ্গনওয়াড়ী স্কুলগুলো থেকেও এমন অভিযোগ উঠে আসে প্রায়শই। এবিষয়ে মহকুমার শিশু উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে ঘটনার কারন জানতে চাওয়া হলে অকপটে ঘটনা  স্বীকার করলেন সিডিপিও।

 তিনি জানিয়েছেন কুমারঘাট মহকুমায় ২২৯ টি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে নিয়ম করে শিশুদের খাওয়ানো হয় খিচুড়ি, সুজির হালুয়া এবং মুড়ি,ডিম, ছোলা সেদ্ধ, চিড়ার পোলাও ইত্যাদি। তিনি জানান, সরকারের খাদ্য দপ্তর থেকে বিদ্যালয়ের জন্য চাল-ডাল সরাসরি সরবরাহ করা হয় ঠিকই, কিন্তু ডিম, মুড়ি,সয়াবিন থেকে অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী খোলা বাজার থেকেই কিনতে হয় অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীদেরকে। 

তিনি বলেন, বাজার থেকে কেনার জন্য দপ্তর সামগ্রীর যে মূল্য নির্ধারন করে, বাজারে দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কারনে তা দিয়ে খাদ্য সামগ্রী কেনা মুশকিল হয়ে পড়েছে দিনিমনিদের পক্ষে।

 তিনি জানিয়েছেন, এর মধ্যেই সবকিছুর ব্যাবস্থা করতে হচ্ছে দিনিমনিদেরকে। আর উনার এই বক্তব্যেই পরোক্ষে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সবকিছু ম্যানেজ করতে গিয়ে খাবারের গুনগত মান বজায় থাকার বিষয়টি নিয়ে।

তিনি এও জানিয়েছেন, কুমারঘাটের আইসিডিএস অফিসটি দীর্ঘদিন ধরেই ধুঁকছে কর্মী স্বল্পতায়। এতে ব্যাহত হচ্ছে অফিসের কাজকর্ম। অফিসটিতে প্রাথমিকভাবে অন্তত একজন করনিক দেওয়ার জন্য বারবার প্রশাসনিক স্তরে জানিয়েও কিছুই কাজ হয়নি বলে জানিয়েছেন সিডিপিও।

শুধু তাই নয়, অনেক অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রগুলোর পরিকাঠামোগত অবস্থাও বোহাল। বৃষ্টি হলেই অনেক স্কুলের ছাওনি বেয়ে জল প্রবেশ করে ঘরের ভেতর বলেই অভিযোগ। এতে কচিকাচাদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীদেরকে। অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র নিয়ে অবিভাবকরা যে অভিযোগ উত্থাপিত করেন তা যে একেবারে মিথ্যেও নয় তা এদিন উঠে এলো আধিকারিকের বক্তব্যেই। ত্রিপুরায় শিক্ষা বিপ্লবের ব্যাপক প্রচার সত্তেও প্রাথমিক অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রেরই এমন হালে সরকারের শিক্ষা বিপ্লবের প্রচার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *