গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় নতুন মোড়, শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ২

নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ২৯ জুলাই: ধর্মনগর প্রগতিরোড এলাকার এক গৃহবধূ কাজলী দেবের মৃত্যুর ঘটনাকে  কেন্দ্র করে  রহস্য নতুন মোড় নিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক দুইটা নাগাদ গৃহবধূ কাজলীদেব শশুর বাড়িতে নিজগৃহে শাড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবারের লোকজন তাকে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে কাজলীকে মৃত বলে ঘোষণা করে।

অভিযোগের ভিত্তিতে ২১/২০২৪ নম্বরে একটি মামলা গৃহীত হয় এবং ১০৩/(১) /৩(৫)এর বিএনএস ধারায় মামলা নিহিত হয়। হাসপাতালে তখন কাজলের স্বামী বিশ্ব দাস ,দেবর বিপ্রদাস, শ্বশুর বীরেন্দ্র দাস এবং শাশুড়ি সকলেই উপস্থিত ছিলেন। খবর দেওয়া হয় ধর্মনগর নয়াপাড়া অটো স্ট্যান্ডস্হিত  কাজলী দেবের বাবা-মাকে। বাকরুদ্ধ কাজলী দেবের বাবা মা ঐদিন বিশেষ কিছু বলতে না পারলেও পরের দিন কাজলির বাবা-মা ধর্মনগর থানায় কাজলির শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছেন বলে মামলা দায়ের করেন।

কাজলির বাবা-মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্মনগর থানার পুলিশ ২১?২৪/২০৩(১)?৩/(৫)ধারায় মামলা নিয়ে কাজলির দেবর বিপ্রদাসকে গ্রেফতার করে। এদিকে কাজলীর  স্বামী শিক্ষক স্বামী বিশ্ব দাস (৩৪) অসুস্থ হয়ে পড়ায় সে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।  পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। স্বামী শিক্ষক বিশ্ব দাস হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে আসলে পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে পাঠায়।

এদিকে কাজলির শ্বশুর বীরেন্দ্র দাস অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক হওয়ায় বয়সের  ভারে  তাকে পুলিশ এখনো আটক করেনি। তবে কাজলির শ্বশুর বীরেন্দ্র দাস জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার রাতে তার দুই ছেলে বিশ্ব দাস ও বিপ্রদাসের মধ্যে পারিবারিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি চলছিল। এই সময়  শশুর বীরেন্দ্র দাস কাজলিকে কিছু কটু কথা বলেন যার ফলে কাজলী গভীর রাতে সকলের অজান্তে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে নিজে গৃহে।

এদিকে কাজলির মা শিপ্রা দেব আরো জানিয়েছেন প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যার পরে মেয়েকে ফোন করলে মেয়ে ফোন রিসিভ করেনি। এমনকি মেয়ের স্বামী বিশ্বকে ফোন করলেও বিশ্ব ফোন রিসিভ করেনি। আবার রাত ৮ নাগাদ দ্বিতীয়বার  তিনি ফোন করলে কাজলি কোন উত্তর না দিয়ে মেসেজ পাঠিয়েছে সে খাওয়া-দাওয়া সেরে ফোন করবে। সবশেষে রাত ১১ টা নাগাদ মেয়ের ফোন না পেয়ে মা শিপ্রা দেব আবার তার মেয়েকে ফোন করলে মেয়ে  কেঁদে কেঁদে  মাকে জানায় এসে তাকে ওখান থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সে আর স্বামীর বাড়িতে থাকবে না। মা তাকে আশ্বস্ত করেন পরের দিন তাকে নিয়ে আসবেন।

কিন্তু সেই নিয়ে আসা আর অধরা  থেকে গেল। এখন সকলেই তাকিয়ে আছেন ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হোক। যদি প্রকৃতই তাকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয় তবে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন সকলে। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে ধর্মনগর পুলিশ আধিকারিক দেবাশীষ সাহা জানান ঘটনাটি সিনিয়র অফিসার এবং ফরেন্সিক টিম দিয়ে তিনি তদন্ত করে দেখছেন প্রকৃত দোষী কে এবং কারা। যারা প্রকৃত দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং দোষীদের যথার্থ শাস্তি দেওয়া হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।