BRAKING NEWS

পানাগড় দার্জিলিং মোড়ে ফুটপাথ জবরদখল করে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয় নির্মাণ

দুর্গাপুর, ৩ জুলাই (হি. স.) : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিকাই সার। রাজ্য সরকার যখন পথচলতি মানুষের সাচ্ছ্যন্দ্যে চলাফেরার জন্য ফুটপাথ ও সরকারি জমি খালি করার কড়া তৎপরতা শুরু করেছে, তখন দলীয় পতাকা লাগিয়ে অবাধে চলছে ফুটপাথ দখল করে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয় নির্মান কাজ। তাও আবার জনবহুল সড়কের পাশে। নজরদারি শিকেয়। অভিযোগ দলীয় কর্মাধ্যক্ষের মদতেই চলছে বেআইনি ফুটপাথ দখল করে নির্মান। আর তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ ও প্রশাসনের নজদারিতে। এমনই নজিরবীহিন ছবি ধরা পড়ল পানাগড়-মোরগ্রাম রাজ্য সড়কের পাশে কাঁকসার দার্জিলিং মোড়ে। প্রতিবাদে সরব বিজেপি।

দক্ষিনবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার করিডর বলেই পরিচত পানাগড়-মোরগ্রাম রাজ্য সড়কের কাঁকসার দার্জিলিং মোড়। ১৯৯৯ সালে সড়কটি নতুন করে সম্প্রসারন ও সংস্কার করা হয়। নাম হয় ১৪ নং রাজ্য সড়ক। ওই সময় ঢেলে সাজানো হয় দার্জিলিং মোড়। রাস্তার ডানদিকে নিকাশি নালা। তার সঙ্গে সৌন্দর্যায়নের জন্য রাস্তার দুদিকে প্রায় দুইশ মিটার লম্বা গার্ডওয়াল দিয়ে বাগিচা করা হয়। এছাড়াও রাস্তার দুই পাশে স্ট্রিট লাইট বসানো হয়। সড়কটির উদ্বোধন করেন তৎকালিন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তৎকালিন পুর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী। রাস্তার পাশে ওই বাগিচার মধ্যে লাগানো হয়েছিল সড়ক উন্মোচনের একটি ফলক। যদিও বর্তমানে সেসব ভেঙে পড়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে জরাজীর্ন অবস্থা ফুলের ওই বাগিচা। ভেঙে পড়েছে স্ট্রিট লাইট। এমনকি সড়কের পাশের পুকুর সুকৌশলে চলছে ভরাট কাজ। সেখানে আবার গড়ে উঠেছে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। আবার উল্টোদিকের একটি পুকুর চা দোকানের বর্জ্য ভাড় ফেলে চলছে ভরাট। আবার রাস্তা লাগোয়া চলছে জবরদখল করে ঝুপড়ি নির্মান। গত কয়েক মাস ধরে বাঁশের খুটি পুঁতে লাগানো হয়েছিল প্ল্যাস্টিকের ত্রিপল। মঙ্গলবার বিকাল থেকে আবার ওইসব ঝুপড়ি ইট, সিমেন্টের দেওয়াল তুলে চলছে নির্মান কাজ। যদিও মেঝেটা অনেক আগেই কংক্রিট করা ছিল। এখন আবার পাকা দেওয়াল তোলার কাজ শুরু হয়েছে। ইমারতি দ্রব্য ইট, বালির স্তুপে লাগানো হয়েছে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির পতাকা।

জানা গেছে, ওই জায়গায় তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের গাড়ি চালক ও হকার সংগঠনের কার্যালয় তৈরী করা হচ্ছিল। কয়েকদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সরকারি জমিতে জবরদখল ও ফুটপাথ দখল উচ্ছেদের কড়া নির্দেশিকা দিয়েছেন। ওই নির্দেশিকাকে কার্যত বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তাঁর দলের কর্মীরা সরকারি জমি দখল করে পার্টি অফিস নির্মান করছে।

আর তাতেই প্রশ্ন উঠেছে। বিজেপি নেতা রমন শর্মা বলেন,” রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন জবরদখল উচ্ছেদের নামে দ্বিচারিতা করছেন। তার সংগঠনের দলীয় কার্যালয় তৈরী হচ্ছে সরকারি জমি ফুটপাথ দখল করে। তৃণমূলের দাপুটে এক কর্মাধ্যক্ষের মদতে এধরনের পুকুর ভরাট, ফুটপাথ দখল করে চলছে নির্মান। আর তাই এর মানে কেবল মাত্র, একটি সম্প্রদায়কে খুশি করার জন্য ও তাদের তোষন করার জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে। আমরা এধরনের ঘৃণ্য রাজনীতির তিব্র বিরোধিতা করছি।” প্রসঙ্গত, দার্জিলিং মোড় লাগোয়া বন বিভাগের অফিসের পাশে রয়েছে খাঁকি পুকুর। গত কয়েকবছর ধরে পুকুটি সুকৌশলে ভরাট করে গোটা ৩০ ঝুপড়ি দোকান নির্মান হয়েছে। একসময় রাস্তার দিকে দোকান করে, পিছন দিকে সুকৌশলে চলছে ভরাট কাজ৷ এছাড়াও পানাগড়- মোরগ্রাম পানাগড় ব্লক হাসপাতাল মোড়ে রাস্তার দুপাশে জবর দখল করে দোকান নির্মান চলছে নির্বিচারে। আর এসব দোকান নির্মানের ফলে সংকির্ন হয়ে পড়ছে সড়ক। তারওপর সড়কের একাংশ গেছে টোটো চালকদের দখলে। তাতেই পথচলা দায় হয়েছে পথচারী ও স্কুল পড়ুয়াদের। দুর্ঘটনা প্রায় ঘটে। তবুও হুঁশ ফেরেনি স্থানীয় ব্লক প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের। যদিও, তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি নবকুমার সামন্ত বলেন,” বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। এধরনের নির্মানে দলের কোন অনুমতি নেই। বিষয়টি প্রশাসন দেখবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *