নয়াদিল্লি, ৮ জুন : ডাক্তারি পড়াশোনায় স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য নিট (ইউজি) [NEET(UG)] পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ৬টি কেন্দ্রে বিতরণ নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা এবং সময়ের ক্ষতিপূরণ হিসেবে নম্বর দেওয়া নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)| নয়াদিল্লিতে শনিবার এনটিএ’র মহানির্দেশক সুবোধ কুমার সিং সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন, অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে গোটা পরীক্ষা পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো ঘটনা কোথাও ঘটেনি। ৬ টি কেন্দ্রে ১৬০০ জন পরীক্ষার্থীকে ভুল প্রশ্নপত্র দেওয়ায় যে সময় নষ্ট হয়েছে, তাতে তাদের কোনো ক্ষতি হবে না| তবে তাদের সময় নষ্ট হওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত করবে কমিটি।
গত ৫ মে ২০২৪ ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) ৫৭১টি শহরের ৪৭৫০টি কেন্দ্রে নিট(ইউজি)’র পরীক্ষা নিয়েছিল| এর মধ্যে বিদেশেরও ১৪টি শহর আছে| ২০১৯ সালের মে মাস থেকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের পক্ষে এই নিট (ইউজি)’র পরীক্ষা নিয়ে থাকে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি| দেশজুড়ে সমস্ত মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্নাতক স্তরের সমস্ত মেডিকেল পাঠক্রমে (এমবিবিএস, বিডিএস ইত্যাদি) ভর্তির ক্ষেত্রে যাতে এক অভিন্ন প্রবেশিকা ও যোগ্যতা পরীক্ষা হয়, তার জন্য এই পদ্ধতি|
২০২৪ সালের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় গত ৪ জুন| এই ফলাফল ঘোষণার পর কিছু বিষয় সামনে আসে| যেমন অপ্রত্যাশিত কাট-অফ মার্কস, ক্ষতিপূরণ নম্বর, সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ছাত্রদের সংখ্যা ইত্যাদি| তাছাড়া লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে ফল প্রকাশ করা নিয়েও আলোচনা উঠেছে|
এনিয়ে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) শনিবার বলেছে, প্রথমে ১৪ জুন এই ফল প্রকাশ করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল| কিন্তু সমস্ত প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া ৪ জুনের মধ্যেই হয়ে যাওয়ায়, দেরী করতে না চেয়ে আগে আগেই ফল ঘোষণা করা হয়েছে| তাছাড়া এনটিএ প্রতি বছর ফল ঘোষণার সময়কে আরও উন্নত করার চেষ্টা করে চলেছে| আর কাট-অফ মার্কস সবসময় পরীক্ষার্থীদের আপেক্ষিক দক্ষতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়| এই বছর ৬৭ জন পরীক্ষার্থী ফুল মার্কস পেয়েছে, অর্থাৎ ৭২০ এর মধ্যে ৭২০ই পেয়েছে|
অন্যদিকে পরীক্ষায় সময় নষ্ট হওয়া নিয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা, দিল্লি এবং ছত্তিসগড় হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল হয়| পরীক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, তারা প্রথমে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ হওয়ার জন্য এবং কিছু ক্ষেত্রে ছেঁড়া ওএমআর পত্র বিতরণ হওয়ার ফলে পরীক্ষার সম্পূর্ণ সময় (৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট) তারা পাননি| তাই এই সমস্ত বিষয় অর্থাৎ অভিযোগ ইত্যাদি খতিয়ে দেখার জন্য এনটিএ একটি অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি (জিআরসি) গঠন করেছে| কমিটির প্রতিবেদনের উপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে|
তবে এনটিএ’র পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের প্রতিবেদন এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিবেচনা করে এবং প্রার্থীদের উত্তর দেওয়ার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে ক্ষতিপূরণ নম্বর দেওয়া হয়েছিল| এই ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুসরণ করেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল|