নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ জুন: এবার নিট-ইউজি পরীক্ষায় কেলেঙ্কারির অভিযোগ, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে এসএফআই কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি দ্বারা শিক্ষার কেন্দ্রিকরণের বিরুদ্ধে সকল অংশের ছাত্রছাত্রীদের এগিয়ে আসার আহবান এসএফআই কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি ( এনটিএ) পরিচালিত এবছরের নিট-আন্ডার গ্রেজুয়েট পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয় গত ৫ই জুন ২০২৪। পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই নিটের পরীক্ষার্থী থেকে শিক্ষকমহল সকলের মধ্যেই ফলাফল নিয়ে নানা প্রশ্ন ও সন্দেহ জন্ম দেয়।
জানা যায় এবছর নোট ৬৭ জন সর্বোচ্চ ৭২০ নম্বর পেয়েছেন, এর আগে কখনো এতো সংখ্যায় ৭২০ নম্বর পায়নি ছাত্রছাত্রীরা। নিট পরীক্ষা গোটা দেশের ৪৭৫০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে গ্রহণ করা হয় কিন্তু তারমধ্যে হরিয়ানার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরপর ৬ জন পরীক্ষার্থী ৭২০ নম্বর পান যা নিয়ে সকলের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পরীক্ষার ফলে আরো দেখা যায় অনেকে ৭১৮,৭১৯ এরকমের নম্বর পেয়েছেন কিন্তু যেখানে কোনো প্রশ্নের উত্তর সঠিক হলে ৪ নম্বর ও ভুল হলে ১ নম্বর বাতিল হয় সেখানে ৭১৮ বা ৭১৯ পাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
এনিয়ে ছাত্রছাত্রীদের থেকে চাপ সৃষ্টি করলে এনটিএ জানায় যে তারা অনেকক্ষেত্রে অনুগ্রহ নম্বর দিয়েছে কিন্তু নিট পরীক্ষার আগে প্রকাশিত নির্দেশনামায় এমন অনুগ্রহ নম্বরের দেওয়ার কোনো উল্লেখ ছিল না। সেইসঙ্গে উল্লেখ করতেই হয় পরীক্ষার দিন বিহারের পাটনায় নিট-ইউজির প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠে ও এনিয়ে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার পর্যন্ত করে কিন্তু এখন অব্দি এনটিএ প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে কোনো সদর্থক জবাব দেয়নি।
এভাবে পরীক্ষার নম্বর বৃদ্ধির ফলে কাট-অফ নম্বর অনেকটাই বৃদ্ধি হয়েছে এবছর। ফলে অনেক ছাত্রছাত্রীরা যারা আর্থিকভাবে দুর্বল, বিভিন্ন প্রভাবশালী টিউশন সেন্টারে পড়তে পারেনি তারা অযোগ্য বলে গণ্য হবে আবার অনেক মেধাবী কিন্তু সুবিধাবঞ্চিত ছাত্রছাত্রী ভালো নম্বর পেয়েও সরকারি কলেজে পড়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে আর্থিক অসচ্ছলতার কারনে।
এমনিতেই এনটিএ এবং এনএমসি (ন্যাশনাল মেডিকেল কাউন্সিল) মেডিক্যাল পরীক্ষায় বেসরকারিকরণের জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, প্রাইভেট কলেজের সংখ্যা অনেক গুন বেড়েছে। আগেও রাজ্যভিত্তিক জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বিভিন্ন কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে এসেছে এখন নিট-ইউজি নিয়েও একই অভিযোগ আসছে।
এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের দুশ্চিন্তায় রাত কাটাতে হচ্ছে কারন অনেকেই আশঙ্কা করছেন পরীক্ষা হয়তো আবারো নিতে পারে এনটিএ। এক্ষেত্রে এখন অব্দি এনটিএ এর তরফ কোনো জবাব আসেনি।
এমতাবস্থায় এসএফআই কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি দাবি জানিয়েছে- ১)ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এন টি এ) কে বাতিল করতে হবে।
২) ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি দ্বারা পরিচালিত সমস্ত পরীক্ষায়ই বিভিন্ন সময় দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে এর নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে।