সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালকে অত্যাধুনিক হাসপাতালে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার

আগরতলা, ১ জুন: নরসিংগড়স্থিত মর্ডান সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল একটি পূর্ণাঙ্গ রাজ্যভিত্তিক হাসপাতাল রূপে যাত্রা শুরু করতে চলেছে। এ হাসপাতালটিকে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক হাসপাতালে উন্নীত করে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। আজ মডার্ন সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালটি পরিদর্শনকালে একথা বলেন স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যে।  এবং সেখানে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হন। 

এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজের অধীনে হাসপাতালটিকে না রেখে তাকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে। পাশাপাশি রোগীর সংখ্যার তুলনায় স্থানাভাব থাকার দরুণ একে ৫০ শয্যা থেকে বৃদ্ধি করে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে পরিগণিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর ফলে রোগীদের পরিষেবা প্রদানের সুযোগ যেমন বাড়বে, তেমনি এই হাসপাতালে সাইক্রিয়াটিতে ডিএনবি কোর্স করার সুযোগও সম্প্রসারিত হবে।  যার ফলে সাইক্রিয়াটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা রাজ্যে বৃদ্ধি পাবে। পর্যালোচনায় দেখা যায় এই মুহূর্তে আজকের দিনে এখানে ১৯৩ জন রোগী রয়েছেন। 

মানসিক রোগীদের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেন স্বাস্থ্য সচিব। টেলি মেন্টাল হেলথ সার্ভিস ( টেলি-মানস) সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন তিনি। এখানে ১৪৪১৬ এই নম্বরে যে কেউ ফোন করে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরামর্শ গ্রহণ করতে পারে। এই নম্বরটিকে সবার কাছে পৌঁছে দিতে যথাযথ উদ্যোগ নিতে স্বাস্থ্য সচিব নির্দেশ দেন। মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রামের পর্যালোচনা করে এর কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন তিনি। স্বাস্থ্য সচিব এই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, এডিকশন ট্রিটমেন্ট ফেসিলিটি, চাইল্ড থেরাপি রুম সহ অন্যান্য পরিষেবার বিষয়ে পরিদর্শন করেন এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত খবরা-খবর নেন। ড্রাগ গ্রহণ করার কারণে যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে এখানে পরিসেবা পেতে এসেছেন এবং এখানে ওএসটি সেন্টার থেকে ওষুধ নিতে এসেছেন তাদের মধ্যে দুই একজনের সঙ্গে কথা বলেন স্বাস্থ্য সচিব। 

তিনি হাসপাতালের ওভারহেড জলের ট্যাংক, ও অন্যান্য পরিষেবা অনতিবিলম্বে প্রদানের জন্য উদ্যোগ নেন। রোগীদের আত্মীয়-স্বজনদের ওয়েটিং রুম তৈরীর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়। 

এই পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে ছিলেন মিশন ডাইরেক্টর রাজীব দত্ত, ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সঞ্জীব কুমার দেববর্মা, জয়েন্ট মিশন ডাইরেক্টর বিনয় ভূষণ দাস, ত্রিপুরা স্টেট এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির প্রকল্প অধিকর্তা ডাঃ সমর্পিতা দত্ত, জিবিপি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল সুপারিটেনডেন্ট ডাঃ কনক চৌধুরী, সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালের হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট ডাঃ স্বপন চন্দ্র বর্মণ, মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম অফিসার ডাঃ উদয়ন মজুমদার প্রমুখ। 

পরিসংখ্যানে দেখা যায় হাসপাতালে যারা চিকিৎসা করতে আসছেন তাদের মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ সিজোফ্রেনীয়া এবং বাইপোলার ডিসঅর্ডারজনিত রোগী। এছাড়া ড্রাগে আসক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৫ শতাংশ। মাননীয় স্বাস্থ্য সচিব এই হাসপাতালের পরিসেবা বৃদ্ধির যাবতীয় উদ্যোগ দ্রুতগতিতে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এছাড়া জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য টার্গেট অডিয়েন্সদের কাছে পৌঁছানোর জন্য আহ্বান জানান। 

মেডিকেল অফিসার ইনচার্জ ও কমিউনিটি হেলথ অফিসারদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবার কাজ অনতিবিলম্বে চালু করতেও তিনি পরামর্শ দেন।