BRAKING NEWS

সন্তান বিক্রির ঘটনায় সরগরম রাজ্য, বিরোধীরা বিভ্রান্তি সরানোর চেষ্টা করছে দাবি বিজেপির, বাম আমলে রাজ্যে প্রতিদিন সন্তান বিক্রি হত, বললেন মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ মে: সন্তান বিক্রির ঘটনায় সরগরম হয়ে উঠেছে গোটা রাজ্য। ধলাই জেলার গন্ডাতুইসা মহকুমায় অভাবের তাড়নায় এক জনজাতি মহিলা সন্তান বিক্রি করেছে এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই শাসক দলের দিকে অভিযোগ তুলে বাম এবং কংগ্রেস দল। এবারে এই বিষয় নিজ প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

বাম আমলে রাজ্যে প্রতিদিন অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রির করা হত।  ধলাই জেলায় ঘটে যাওয়া সন্তান বিক্রির ঘটনা প্রসঙ্গে এমনটাই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডাঃ) মানিক সাহা।

এদিন তিনি বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে শিশু বিক্রির খবর প্রকাশ্যে আসার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তার মায়ের কাছে সেই শিশুকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাম আমলে প্রতিদিন রাজ্যে সন্তান বিক্রির খবর প্রকাশ্যে আসত। এনিয়ে বিরোধীরা রাজ্যে সমস্যা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন।

তাছাড়া, রাজ্য সরকার ধলাই কেলায় অতিরিক্ত আর্থ প্রদান করে থাকে। তা বিগত দিনে করা হত না।

সন্তান বিক্রির ঘটনায় স্পষ্টিকরণ দিয়ে এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন খাদ্যমন্ত্রী। এই সংবাদ সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, গন্ডাতুইসা মহকুমায় অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি হয়েছে বলে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। উল্লেখ্য, আজ বিরোধী দলনেতা রাজ্যের মুখ্যসচিবকে গন্ডাতুইসা মহকুমায় অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রির ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলনেতার অভিযোগ বিভ্রান্তিমূলক ও অসত্য।

আজ সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী জানান, গন্ডাতুইসা মহকুমার মোরমারি ত্রিপুরার সদ্যোজাত সন্তান বিক্রির অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার নজরে আনা হয়। মুখ্যমন্ত্রী সাথে সাথেই সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী আরো জানান, ঘটনার তদন্ত করে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এই ঘটনা সঠিক নয়। মোরমারি ত্রিপুরার কিছুদিন পূর্বে স্বামী প্রয়াত হয়েছেন। এর আগেই তার ৫ সন্তান রয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর ষষ্ঠ সন্তান গত ২২ মে, ২০২৪ তারিখে জন্মগ্রহণ করে। তাই তিনি সদ্যোজাত শিশুকে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে দত্তক দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আইনি জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি।

খাদ্যমন্ত্রী জানান, তার পরিবার গণবণ্টন ব্যবস্থায় সব সুবিধা পাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্য চাইল্ড রাইট প্রোটেকশন কমিশনের চেয়ারম্যান, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সহ প্রশাসনের আধিকারিকগণ মোরমারি ত্রিপুরার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বর্তমানে মা ও তার সদ্যোজাত সন্তানের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য কুলাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে সোমবার  সন্তান বিক্রির ঘটনায় বাম এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয় প্রদেশ বিজেপি দল।
বাম এবং কংগ্রেসের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করলেন প্রদেশ প্রবক্তা অস্মিতা বনিক। বাম এবং কংগ্রেস দল সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, তাই এ ধরনের যুক্তিহীন কথাবার্তা বলছে। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই বললেন বিজেপি নেত্রী।

তিনি আরো বলেন, বাম এবং কংগ্রেস দল রাজ্যে অনাহারে সন্তান বিক্রির কথা বলছেন, কিন্তু তাদের সময়ে রাজ্য অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। খুন, সন্ত্রাস, হত্যা, সন্তান বিক্রি, অনাহার অর্ধাহারে মানুষ জর্জরিত ছিল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের শাসনকাল তুলে ধরে তিনি বলেন, মানিক সরকারের শাসনকালের প্রথম ১১২ দিনে রাজ্যে নিহত হয়েছেন ১১৮, অপহৃত হয়েছেন ৮৭ জন, ধর্ষিতা ২৯, নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৬৬ জন। তাই বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে রাজ্যের চেহারা অন্যরকম ছিল। কিন্তু বিজেপি সরকার রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর রাজ্যের সার্বিক উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। 

——— 

ReplyForwardAdd reaction

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *