BRAKING NEWS

গুয়াহাটিতে আজ অপরাধ বিষয়ক নতুন আইন সম্পর্কে সম্মেলনের উদ্বোধন

নয়াদিল্লি, ১৭ মে : সেকেলে ঔপনিবেশিক আইন তুলে দিতে এবং নাগরিক কেন্দ্রিক ও প্রাণবন্ত গণতন্ত্রের প্রয়োজন মেটাতে পারে এমন ব্যবহারযোগ্য বিধি প্রণয়ন করতে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারত সরকার অনেকগুলি উদ্যোগ নিয়েছে৷ সম্প্রতি এরই অংশ হিসেবে দেশে অপরাধ বিষয়ক বিচার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে নতুন তিনটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে৷ নতুন এই আইনগুলি হল “ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩’, “ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ২০২৩’ এবং “ভারতীয় স্বাক্ষ্য অধিনিয়ম’৷ এর মাধ্যমে পূর্বেকার অপরাধ বিষয়ক আইন “ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, ১৮৬০’, “কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৯৭৩’ এবং “ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২’ প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে৷ এই মর্মে নতুন অপরাধ বিষয়ক আইনগুলি ২০২৪-এর ১লা জুলাই থেকে কার্যকর করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে৷

নতুন এই আইনগুলি সম্পর্কে, বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট অংশীদার ও আইন চর্চাকারী মহলের মধ্যে, সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার মন্ত্রক শনিবার ও রবিবার (১৮ ও ১৯ মে, ২০২৪) আসাম সরকারের সঙ্গে মিলিতভাবে আইআইটি গুয়াহাটি নামাতি জলাহ-য় ড: ভূপেন হাজারিকা প্রেক্ষাগৃহে এক সম্মেলনের আয়োজন করছে৷ অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনের শিরোনাম “ইন্ডিয়া’স প্রগ্রেসিভ পাথ ইন দ্য অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম’৷ আসামের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ডা: হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে সম্মতি জানিয়েছেন৷ এছাড়াও এ উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতি জাস্টিস ঋষিকেশ রায়, গুয়াহাটি হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি চিফ জাস্টিস বিজয় বিশনৈ এবং হাইকোর্ট অব সিকিমের মাননীয় বিচারপতি চিফ জাস্টিস বিশ্বনাথ সমাদ্দার সম্মানীত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন৷ অনুষ্ঠানটিকে আর যেসব পদাধিকারীরা অলঙ্কৃত করবেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার মন্ত্রকের মাননীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল এবং কেন্দ্রীয় আইন কমিশনের সদস্য সচিব ডঃ রীতা বৈশিষ্ঠ৷

এই সম্মেলনটির লক্ষ্য হল নতুন অপরাধ বিষয়ক আইন তিনটির গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি তুলে ধরা এবং কারিগরি ও প্রশ্নোত্তর অধিবেশনের মাধ্যমে অর্থবহ মতামত বিনিময় পর্বের আয়োজন করা৷ এছাড়াও, পাশাপাশি, এই সম্মেলনের বিভিন্ন আদালতের বিচারক, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির প্রতিনিধি, পুলিশ আধিকারিক, সরকরি আইনজীবী, জেলা প্রশাসনের আধিকারিক এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির আইন পাঠ্যক্রমের ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করবেন৷ এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, চলতি বছরেরই ২০ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে এই ধারাবাহিক পর্বের প্রথম সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷

ভারতের অপরাধ বিষয়ক বিচার ব্যবস্থার কাঠামোকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করতে এবং নাগরিকদের জীবনযাত্রায় এই ব্যবস্থা যে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে তাতে দৃষ্টিদানের লক্ষ্যে নতুন অপরাধ বিষয়ক তিনটি আইনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের উপর শনিবার সম্মেলনটির উদ্বোধনী অধিবেশনে আলোকপাত করা হবে৷ সেই সঙ্গে উদ্বোধনের দিন বক্তব্য সমূহ উপস্থাপনার পাশাপাশি, সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন নতুন প্রত্যেকটি আইনকে অবলম্বন করে তিনটি কারিগরি অধিবেশনের সংস্থান রাখা হচ্ছে৷

কারিগরি অধিবেশন-১ : রবিবার এই অধিবেশনে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০১৩-এর রূপায়ণ পর্যালোচনা করতে একটি তুলনামূলক দৃষ্টিকোণ থেকে আইনটির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হবে৷

কারিগরি অধিবেশন-২ : একই দিনে বিচারাধীন অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত সাক্ষ্য প্রমাণের, অর্থাৎ ভারতীয় স্বাক্ষ্য অধিনিয়ম, ২০২৩-এর উল্লেখযোগ্য দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করা হবে৷ আলোচনায় বিস্তারিত সংজ্ঞার প্রচলনের দ্বারা “প্রমাণাদি’ ও “স্বাক্ষ্য’-র যে ব্যাপক সুযোগ সমূহ রয়েছে তার উপর আলোকপাত করা হবে৷

কারিগরি অধিবেশন-৩ : ওই দিনই বিচার বিভাগীয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির সক্রিয়তার জন্য ব্যবহারিক বোধগম্যতার যেসব আইসিটি টুলের ব্যবহার করা হয়, এবং একটি অপরাধের তদন্ত পুলিশ আধিকারিকরা এতদিন যে ধরনের পন্থা অবলম্বন করতেন তাতে পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনতে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ২০২৩-এ সংস্থান রাখা হয়েছে৷ এই অধিবেশনে উল্লিখিত দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করা হবে৷

এই সম্মেলন সংশ্লিষ্ট অংশীদারগণ ও নাগরিকদের মধ্যে অপরাধ বিষয়ক আইন ত্রয়ীর সম্পর্কে অনুধাবন ও প্রভাব নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *