নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই, ১৩ মে: সালিশী সভার মধ্যেই স্বামীর দায়ের কোপে আহত হয়েছেন স্ত্রী। ঘটনার বীভৎসতা দেখে ঘটনাস্থলেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন শ্বশুর। ব্যাপক চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটে সোমবার বিকেলে খোয়াই থানাধীন উত্তর দুর্গানগর গ্রামে।
ঘটনার কিছু সময়ের মধ্যেই খোয়াই মহিলা থানার পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী অনুপ সাহাকে(৩২) গ্রেফতার করেছে। আর অন্যদিকে দায়ের কোপে মারাত্মক জখম গৃহবধূ জয়া দাসকে(২০) খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তার অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাকে জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই অনুপ তার স্ত্রীকে সন্দেহ করতো পরকীয়া নিয়ে। ইতিপূর্বেও বেশ কয়েকবার স্বামীর হাতে আহত হয়েছে ওই গৃহবধূ। আর এনিয়ে বেশ কয়েকবার এলাকার মানুষজনদের মধ্যে সালিশি সভাও হয়। কিছুদিন ঠিকঠাক থাকার পর পুনরায় শুরু হতো স্ত্রীর উপর অত্যাচার।
গৃহবধূ জয়া দাস জানিয়েছে, ক্রমান্বয়ে তাকে মারধর করার ঘটনা নিয়ে সোমবার বিকেলে উত্তর দুর্গানগর তার শ্বশুরবাড়িতে একটি সালিশি সভা হয়। এই সভায় গৃহবধূর পিতা নিরুলাল দাস, তার দুই মামা সহ এলাকার কাউন্সিলর এবং পাড়াপড়শিরা ছিলেন। সালিশি সভায় সিদ্ধান্ত হয় গৃহবধূ জয়া দাস কিছুদিনের জন্য বাপের বাড়ি চলে যাবে। স্বামী অনুপ সাহার মানসিকতা ঠিক হলে তখন সে আবার আসবে। সালিশি সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে গৃহবধূ জয়া দাস যখন বাড়ি যাবার জন্য তৈরি হচ্ছিল ঠিক তখন পেছন থেকে অনুপ সাহা একটি দা দিয়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করে।
ঘটনার পর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গৃহবধূ এবং তা দেখে মেয়ের বাবা নিরুলাল দাস মেয়ের শ্বশুর বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনার পর উভয়কে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে পাঠানো হয় জিবি হাসপাতালে। হাসপাতালে থাকাকালীন অবস্থায় জয়া দাস জানতে পারেনি তার বাবা নিরুলাল দাস হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। উল্লেখ্য গৃহবধূ জয়া দাসের পাঁচ মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে উত্তর দুর্গানগর এলাকায় ব্যাপক শোকের ছায়া নেমে আসে।