অমরাবতী, ৮ মে (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, বুধবার অন্ধ্র প্রদেশের রাজামপেটে অনুষ্ঠিত একটি বিশাল জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময়, ওয়াইএসআরসিপি সরকারের দুর্নীতি এবং তোষামদের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন এবং গত ১০ বছরে বিজেপি সরকারের প্রাপ্তিগুলিকেও তুলে ধরেন। উক্ত অনুষ্ঠানে রাজামপেটের প্রার্থী শ্রী তিরং কুমার রেড্ডি, চিত্তুরের শ্রী প্রসাদ, তিরুপতির প্রার্থী শ্রী ওয়ারা প্রসাদ রাও, কুদ্দাপাহের প্রার্থী শ্রী ভূপেশ রেড্ডি এবং বিধানসভার প্রার্থীরা সহ অন্যান্য নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, মোদীর লক্ষ্য অন্ধ্রপ্রদেশের উন্নয়ন। জনগণ কয়েক দশক ধরে বিরোধী সরকারকে বহাল রাখলেও জনগণ কিছুই পায়নি। এখানে কোনও উন্নয়ন হয়নি, এখানে সেচের ব্যবস্থা নেই, এখানে কোনও শিল্প নেই, এখানে কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন, এখানকার তরুণ সম্প্রদায়কে কাজের জন্য অন্য শহরে যেতে হচ্ছে। এই অবস্থা বদলাতে অন্ধ্রপ্রদেশে ডাবল ইঞ্জিনের সরকার আনা দরকার। অন্ধ্রপ্রদেশের জনগণ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে ওয়াইএসআর কংগ্রেস সরকার গঠন করেছিল, কিন্তু তারা জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ওয়াইএসআর কংগ্রেস এখানে গরীবদের নয়, মাফিয়াদের উন্নয়ন করেছে। ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মন্ত্রীরা এখানে গুন্ডামি ও উচ্ছৃঙ্খল শাসন চালায়। এখানকার সরকার বালি মাফিয়াদের এতটা তোল্লাই দিয়েছে, যার কারণে আন্নামাইয়া বাঁধ ভেঙেছে। রাজ্যে থেকে এই ধরনের মাফিয়া এবং ওয়াইএসআরসিপি সরকারের চলে যাওয়ার কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে। এনডিএ সরকার প্রতিটি মাফিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। মোদী প্রত্যেক বাড়িতে কলের জল পৌঁছে দিতে চান, কিন্তু এখানকার সরকার জলজীবন মিশন বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে না। এই সরকার রায়ালসিমার কৃষকদের সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছিল, কিন্তু রাজ্যে এনডিএ সরকার গঠিত হলে সেচ প্রকল্পগুলি দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শক্তিশালী হলে দেশও শক্তিশালী হয়। আজ উপসাগরীয় দেশগুলিতে ভারতীয়দের সম্মান বেড়েছে। সম্প্রতি বিজেপি সরকার কাতারে আটকে পড়া ভারতীয়দের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে এনেছে। এখন যদি দেশে সেই দশ বছর আগের কংগ্রেস সরকার থাকত তবে সেইসব নাগরিকদের জীবিত থাকায় কঠিন হয়ে যেত। এনডিএ-কে দেওয়া জনগণের প্রতিটি ভোটেই ভারতের সম্মানবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। মোদী দেশ গঠনের সংকল্প করেছেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করছেন। কিন্তু কংগ্রেস দেশকে পিছনে নিয়ে যেতে চায়। কংগ্রেস ক্রমাগত ৩৭০ অনুচ্ছেদ, সিএএ, প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মতো গত ১০ বছরের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো বন্ধ করার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি রাম মন্দির নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে বদলে দিয়ে মন্দির বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলছে কংগ্রেস।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আজ কংগ্রেস তার শিকড় থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং কংগ্রেসের মনে সর্বদা বিভেদের চিন্তাভাবনা থাকে। এই কারণে কংগ্রেস নেতারা কখনো ভারতকে রাষ্ট্র হিসেবে মানতে চায় না। তারা আবার কখনো দেশ ভাগের কথা বলে। আজ রাহুল গান্ধীর উপদেষ্টা কংগ্রেস নেতা স্যাম পিত্রোদা উত্তর-পূর্বের নাগরিকদের চীনা, দক্ষিণ ভারতের নাগরিকদের আফ্রিকান, পশ্চিম ভারতের নাগরিকদের আরবিয়ান এবং উত্তর ভারতের নাগরিকদের শ্বেতাঙ্গ বলে একটি অত্যন্ত অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন। তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এবং শিবসেনা (উদ্ধব) নেতা উদ্ধব ঠাকরেকে বলতে হবে এই বক্তব্য কি তাঁরা মেনে নিচ্ছেন? ক্ষমতার জন্য দেশকে ভাগ করতে চাওয়া কংগ্রেস এখন ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করতে শুরু করেছে। যাঁরা কংগ্রেসের এই বক্তব্যকে সমর্থন করছেন, তাঁদের জানা উচিত যে স্যাম পিত্রোদা আজ যা বলেছেন, রাহুল গান্ধী চার দিন আগে একই ধরনের কথা বলেছিলেন। তাদের উভয়ের কথাই এক এবং এই উভয় বক্তব্যই বিচার বিবেচনা করেই বলেছেন তাঁরা। কংগ্রেসের জেতার জন্য আর কোনও ইস্যু নেই, কিন্তু তার জন্য ভারতীয়দের উপহাস করা উচিত নয়। তৃতীয় দফায় কংগ্রেস হারার ভয়ে যা খুশি মন্তব্য করেছে। দেশের মানুষ কংগ্রেসের প্রতিটি বিভেদমূলক বক্তব্য শুনছে এবং কংগ্রেসকে তারা ক্ষমা করবে না।
মাননীয় মোদী বলেন যে আজ এনডিএ সরকার দেশে শিল্প করিডোর নির্মাণের উপর জোর দিচ্ছে। সারাদেশে প্রতিদিন নতুন নতুন এক্সপ্রেসওয়ে, চার লেন ও ছয় লেনের জাতীয় সড়ক তৈরি হচ্ছে। নান্দিয়াল-এরাগুন্টলা রেললাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে, কাদাপ্পা-বেঙ্গালুরু রেলপথের কাজ অনুমোদিত হয়েছে এবং কাদাপ্পা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল নির্মাণাধীন রয়েছে। এই ধরনের প্রতিটি পরিকাঠামোর কাজ আগামী পাঁচ বছরে আরও প্রসারিত হবে। দক্ষিণেও বুলেট ট্রেন চালানোর ঘোষণা করেছে বিজেপি। রায়ালসীমার কৃষকদের জীবন বদলে দিতে পারে একমাত্র এনডিএ সরকার। এখানে টমেটো ভালো পরিমাণে জন্মায় এবং আগামী পাঁচ বছরে বিজেপি টমেটোর মতো সবজি সংরক্ষণের জন্য একটি বিশেষ স্টোরেজ ক্লাস্টার তৈরি করতে চলেছে। পুলিভেন্ডুলায় কলা প্রক্রিয়াকরণ ক্লাস্টার গঠনের ফলে কৃষক ও যুবকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পও সম্প্রসারিত হবে এবং কৃষক উৎপাদক সংঘগুলোকে সহায়তা প্রদান করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী অন্ধ্রপ্রদেশে এবং দেশে বিজেপি সরকার গঠনের জন্য বিজেপির সমস্ত বিধানসভা এবং লোকসভা প্রার্থীদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে বিজয়ী করার জন্য জনগনের কাছে আবেদন করেন।