নিজস্ব প্রতিনিধি, বিলোনিয়া, ২৩ এপ্রিল:
পাগলা রাজা নামে খ্যাত মহম্মদ বিন তুঘলকের রাজত্ব নেই, তারপরেও বিংশ শতাব্দীতে এসেও যেন মহম্মদ বিন তুঘলকের বংশধরের দেখা মিললো বিলোনিয়া বিদ্যাপিঠ স্কুলে। উদ্ভট উদ্ভট কীর্তি কান্ড করে চলছে একের পর এক। কখনো ছাত্রছাত্রীদের উপর ফরমান জারি, কখনো বা শিক্ষক শিক্ষিকাদের উপর। বিলোনিয়া বিদ্যাপিঠ দ্ধাদশ শ্রেনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইনচার্জ জীবন বাবুর তুঘলকি কাণ্ডে হতবাক বিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীরা।
দূরদূরান্ত থেকে ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষিকারা বিদ্যালয়ে এসে ফিরে যেতে হলো বিদ্যালয় বন্ধ দেখে। দক্ষিণ জেলা শিক্ষা আধিকারিকের পক্ষ থেকে বিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা না হলেও বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইনচার্জ জীবন বাবু স্বঘোষিত ফরমান জারি করেছে। পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা নির্বাচনের পোষ্টাল ব্যালেটে ভোট গ্ৰহন করা হবে বিদ্যালয়ে তাই বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। অথচ রাজ্য শিক্ষা দপ্তর ও জেলা শিক্ষা অফিস থেকে ছুটির কোন ঘোষণা না হলেও শিক্ষক ইনচার্জ জীবন বাবু কি করে এই ছুটি ঘোষণা দিতে পারে এই নিয়ে উঠছে গুঞ্জন।
শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসার পর বিদ্যালয় বন্ধ দেখে একেবারে থ হয়ে যায়। এই বিষয়ে নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ জেলা শিক্ষা আধিকারিকের কক্ষে গিয়ে জানতে চাইলে, জেলা শিক্ষা আধিকারিক সুবীর মজুমদার জানান, জেলা শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে ওই স্কুলের ছুটি ঘোষণা করা হয়নি। বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর এই খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। এ বিষয়ে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও খবর।
এই দিকে পুর্ব ত্রিপুরা লোকসভা নির্বাচনে পোষ্টাল ব্যালেটে ভোট গ্রহণ সময় মত না হওয়ার কারণে বিলোনিয়া মহকুমা শাসক তথা এসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার বিলোনিয়া বিদ্যাপিঠ দ্ধাদশ শ্রেনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইনচার্জ জীবন দেবনাথকে শোকজ নোটিশ জারি করেছে। ২৬ শে এপ্রিল পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা নির্বাচন । আজ থেকে শুরু হয়েছে পোস্টাল ব্যালেটে ভোট গ্রহণ । এই পোষ্টাল ভোট গ্রহণ কেন্দ্র হয় বিলোনিয়া বিদ্যাপিঠ স্কুলে। এই বিষয়ে বিলোনিয়া মহকুমা শাসক তথা এসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার রিঙ্কু লাথার বিদ্যাপিঠ স্কুলের শিক্ষক ইনচার্জ জীবন দেবনাথকে তিনটি শ্রেণী কক্ষ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে অবগত করেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ পোষ্টাল ভোট গ্রহণে নিযুক্ত কর্মীরা আসার পর বিদ্যালয় বন্ধ দেখে খবর দেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইনচার্জ জীবন বাবুকে। জীবন বাবু সাফ জানিয়ে দেয় তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না।
ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল নয়টা নাগাদ। কিন্তু নয়টা বেজে যাওয়ার পরেও বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইনচার্জ জীবন দেবনাথের কোন টনক নড়েনি। অবশেষে বিলোনিয়া নির্বাচন দায়িত্ব প্রাপ্ত আধিকারিকদের চাপে পরে জীবন বাবু খবর দেয় বিদ্যালয়ের গ্ৰুপ ডি কর্মীকে। গ্ৰুপ ডি কর্মী হন্ত দন্ত হয়ে এসে বিদ্যালয়ের গেইট খুলে দেওয়ার পর শুরু হয় ভোট গ্ৰহন। জীবন বাবুর অবহেলায় তাও আধ ঘন্টা দেরিতে পোষ্টাল ব্যালেটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে গোটা বিলোনিয়া জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।
ReplyForwardAdd reaction |