BRAKING NEWS

পা থেকে মাথা সবাই ধরা পড়বে, শাস্তি পাবে : হুঙ্কার দিলীপের

দুর্গাপুর, ২২ এপ্রিল (হি. স.) : “এসএসসি পরীক্ষায় দুনম্বরি হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নষ্ট হয়েছে। যারা পরীক্ষা না দিয়ে চাকরি পেয়েছিল, তাদের ভবিষ্যত নষ্ট হবে। এই সঙ্কট তৈরী করার দায় রাজ্যসরকার আর তৃণমূল নেতাদের। টাকা নিয়ে যারা এই অন্যায় করেছে, চাকরি দিয়েছে এবার তাঁদের খুঁজবে সিবিআই। পা থেকে মাথা সবাই ধরা পড়বে।” সোমবার বুদবুদে ২০১৬ র এসএসসি নিয়োগ বাতিলের আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়া রাজ্য সরকারকেই দায়ী করে কড়া আক্রমন করলেন বর্ধমান দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।

রোজগার মতই সোমবার সকালে বর্ধমানের মির্জাপুর স্কুল মাঠে প্রাতঃভ্রমন ও দেওয়ানদীঘিতে চা-চক্র করেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তবে এদিন দেওয়ানদীঘিতে সমস্ত চা’ দোকান বন্ধ থাকায় বিস্ফোরক অভিযোগ করে তিনি বলেন,” আমি আসবো, তাই চা’য়ের দোকানগুলো বন্ধ করিয়েছে তৃণমূল। মানুষকে যে কষ্ট দিচ্ছে, এই নির্বাচন থেকে তার ফল ভোগ করতে হবে। এই রাজনীতি চলবে না।” রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক জনসভা নিজেকে টার্গেট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তবে সেপ্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ পাল্টা খোঁচা দিয়ে বলেন,” ভোট হলেই টার্গেট হয়ে যান উনি। তিনি তো বাঘিনী, আর ভোট আসলে বিড়ালের মত ম্যাঁও ম্যাঁও করে বলেন, আমাকে ঘিরে রাখা হয়েছে। টার্গেট করা হয়েছে বলে মায়াকান্না শুরু করেন।” গঙ্গারমপুরে বিএসএফের গুলি চালানোর নিন্দার সঙ্গে দাবী করেন মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর ভাইয়ের গুলি লেগেছে।

সে প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে দিলীপবাবু বলেন,” ওনার ভাই যদি শাজাহান- ভাদু শেখ হয়, তাহলে গুলিতো লাগবেই। যারা তোলাবাজি, গরিব মানুষের রেশন চুরি করবে। শৌচাগার, বাড়ী তৈরীর কাটমানি নেবে। তারা তো গুলি খাবেই। ওনার ওইসব ভাইয়ের কপালে ওটাই লেখা আছে।” তিনি আরও বলেন,” মমতা ব্যানার্জী যা কর্ম করেছেন, তার ফল ভোগ করতে হবে। নেতাদের চোর আর চোরেদের নেতা বানিয়েছেন। ভাবছিলেন বেঁচে যাবেন। তার কোন রাস্তা নেই। কোন সহানুভুতি নয়। প্রায়শ্চিত ওনাকে করতে হবে।” গতকাল অভিষেক ব্যানার্জী এক জনসভা থেকে বিজেপিকে আক্রমন করে বলেন,” মাথার চুল থেকে পা’য়ের নখ বিজেপির সব দু-নম্বরি। কোন ভদ্রলোক বিজেপি করে না।” তার জবাবে কড়া ভাষায় আক্রমন করে দিলীপ ঘোষ বলেন,” উনি কি ভদ্রলোক? যার বউ, চাকর সবাইকে ইডি তলব করছে। রাস্তায় বেরোলো লোকে চোর চোর বলছে। এই সংস্কৃতি ‘ব্যানার্জী’ পরিবারই নিয়ে এসেছে।” রাজ্যের সবুজসাথীর সাইকেল বাংলাদেশের বাজারে চড়া দামে বিকোচ্ছে। সেপ্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন,” আগে অ্যাম্বুলেন্সে করে টাকা যেত। এখন সাইকেল বিলি করে ভোট নিচ্ছে। আবার ওই সাইকেল বাংলাদেশে পাচার করেছে। ভোটের পর তৃণমূলের অনেক নেতাও বাংলাদেশে চলে যাবে।”

প্রসঙ্গত, সোমবারই ২০১৬ সালে নিয়োগ হওয়া ২৩ হাজার৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রয়োজন হলে বাতিল হওয়া চাকরি প্রার্থীদের নিজেদের হেফাজতে নিয়েও তদন্ত চালাতে পারে সিবিআই। লোকসভা নির্বাচনের আবহে কলকাতা হাইকোর্টের এই বিচারের পরেই গোটা রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এদিন দুপুরে বুদবুদের কর্মীসভায় যোগ দেন বর্ধমান- দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন,” পশ্চিমবঙ্গের মানুষ উন্নয়নের জন্য মোদিজীর দিকে তাকিয়ে থাকেন। আর বিচারের জন্য আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকেন।

এসএসসি পরীক্ষায় দুনম্বরি হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নষ্ট হয়েছে। যারা পরীক্ষা না দিয়ে চাকরি পেয়েছিল, তাদের ভবিষ্যত নষ্ট হবে। এই সঙ্কট তৈরী করার দায় রাজ্য সরকার আর তৃণমূল নেতাদের। টাকা নিয়ে যারা এই অন্যায় করেছে, চাকরি দিয়েছে এবার তাঁদের খুঁজবে সিবিআই। ওটাই আসল কাজ। পা থেকে মাথা সবাই ধরা পড়বে। শাস্তি ওদের দিতেই হবে।” টাকা ফেরত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন,” পশ্চিমবঙ্গের বদনাম হয়েছে। রন্ধে রন্ধে দুর্নীতি। এটার জন্য যারা দায়ী, তাদের জেলে যেতেই হবে। যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাদেরকে সুদসহ বেতন ফেরত দেওয়ার কথা যেমন বলা হয়েছে। আর যারা টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছে তাদেরও সুদসহ টাকা ফেরত দিতে হবে।” এদিনের আদালতের রায় রাজ্য সরকার জোর ধাক্কা খেয়েছে। সেপ্রসঙ্গে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষ বলেন,” রাজ্য সরকার গত কয়েক বছর ধরে আদালতে ধাক্কা খেয়ে আসছে। এরকম দুর্নীতির সরকার কখনই আসেনি। এটা ইতিহাস। তবে এই ধাক্কা সামলাতে পারবে বলে মনে হয় না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *