কলকাতা, ২১ এপ্রিল (হি.স.): তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রাজনাথ সিং। রবিবার পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রচারে রাজনাথ সিং বলেছেন, সন্দেশখালির ঘটনা গোটা মানবতাকে লজ্জিত করেছে বিশ্বে। রাজনাথ বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ ভারতের সাংস্কৃতিক নবজাগরণের প্রধান কেন্দ্র। বাংলার গৌরবময় অতীত রয়েছে। চৈতন্য মহাপ্রভু, রাজা রাম মোহন রায় এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো সমাজ সংস্কারক এবং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, শ্যামা প্রসাদ মুখার্জির মতো জাতীয়তাবাদী বীররাও এই ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সাথে সাথেই সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে অরাজকতার পরিবেশ, গুন্ডা ও দুষ্কৃতীদের সাহস বেশি এবং এখানকার ভালো মানুষরা ভয় পাচ্ছে। মহান সংস্কৃতির এই পণ্ডিতদের ভূমি এখন মমতার শাসনে দেশে অপরাধ ও সাম্প্রদায়িকতার জন্য পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটে। এবার জনতা যদি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পতাকা ছড়িয়ে দেন তাহলে সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটানোর সাহস কেউ পাবে না। পশ্চিমবঙ্গকে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে রাজনাথ সিং বলেছেন, এমনকি ইডি এবং সিবিআই পশ্চিমবঙ্গে গুন্ডাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, যেখানে আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। যে কোনও রাজ্যের উন্নতির প্রথম শর্ত হল ভাল আইন-শৃঙ্খলা থাকতে হবে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে শুধু গুন্ডা ও দুষ্কৃতীরাই শক্তিশালী। সন্দেশখালির ঘটনায় গোটা মানবতাকে লজ্জিত করেছে বিশ্বে। পশ্চিমবঙ্গে খাদির আড়ালে লুটপাট চলছে। নিয়োগের জন্য অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটছে। মাঝে মাঝে মনে হয় তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র ‘কংগ্রেস’। মুখ্যমন্ত্রীর নামে মমতা থাকলেও তিনি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখেন না। শ্রী সিং বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গের দরিদ্রদের কল্যাণে অনেক প্রকল্প শুরু করেছেন। গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল সরকারের কারণে বাংলার মানুষ এই সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গেও জল-জীবন মিশন সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। মানুষকে স্থায়ী বাড়ি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা শুরু হয়েছিল, যার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবর্তন করে বাংলা আবাস যোজনা করেছিলেন। গরিবদের যে বাড়ি দেওয়া উচিত তা তাদের দেওয়া হচ্ছে না, তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের দেওয়া হচ্ছে। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যের স্বাস্থ্য বীমা সহ আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পও পশ্চিমবঙ্গে প্রয়োগ করা হয়নি। কিষাণ সম্মান নিধির অধীনে সারাদেশের কৃষকদের অর্থ দেওয়া হচ্ছে কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের এই সুবিধা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।”