আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের উদ্যোগে গণহত্যা দিবস পালিত

আগরতলা, ২৬ মার্চ: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে বাংলাদেশে সংঘটিত ইতিহাসের বর্বরোচিত গণহত্যায় নিহত শহীদদের স্মরণে বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন কর্তৃক যথাযোগ্য মর্যাদায় ২৫ মার্চ (সোমবার) গণহত্যা দিবস পালন করা হয়। গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গনে বিভিন্ন আয়োজন করা হয়। ঐ দিন রাত্রি ০৯:০০ ঘটিকায় অফিস প্রাঙ্গণে সহকারী হাই কমিশনের পক্ষ হতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

রাত্রি ০৯:১০ ঘটিকায় মানব ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই গণহত্যা স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং পরবর্তীতে শহিদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। রাত্রি ০৯:১৫ ঘটিকায় জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের শাহাদতবরণকারী সদস্যবৃন্দ, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে শহিদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। ০৯:২০ ঘটিকায় গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। অতঃপর রাত ০৯:২৫ ঘটিকায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে সংঘটিত ইতিহাসের বর্বরোচিত গণহত্যার উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এরপর দিবসটির প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্যের উপর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও অত্র মিশনের সহকারী হাইকমিশনার জনাব আরিফ মোহাম্মাদ। সহকারী হাইকমিশনার জনাব আরিফ মোহাম্মাদ ও আগত অতিথিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ করেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহিদ, সম্ভ্রমহারা ২ লাখ মা বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, যাঁদের মহান আত্নত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

২৫ শে মার্চের গণহত্যায় সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের রাতে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অধ্যায় এবং পরবর্তী দীর্ঘ ০৯ মাসে মোট ত্রিশ লক্ষ মানুষ তাদের জীবন উৎসর্গ। বক্তারা উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী কাপুরুষের মতো ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে, মেতে ওঠে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যায়, যা কালরাত হিসেবে পরিচিত। বক্তারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে সংঘটিত মানব ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই গণহত্যাকে “আন্তর্জাতিক গণহত্যা
দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ভারতসহ বিশ্বের সকল দেশের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ণের ব্যবস্থা করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অত্র মিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান জনাব মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী।