আগরতলা, ৭ মার্চ : ত্রিপুরা মন্ত্রিসভায় সদস্য হিসেবে অনিমেষ দেব্বর্মা এবং প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বৃষকেতু দেব্বর্মা আজ শপথ নিয়েছেন। ত্রিপুরার রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু রাজভবনে তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন। এরই মধ্য দিয়ে তিপরা মথা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপির সাথে জোটে সামিল হয়েছে।
এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা, কৃষি মন্ত্রী রতন লাল নাথ, পর্যটন ও পরিবহনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মন্ত্রী সুধাংশু দাস, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, তিপরা মথার প্রাক্তন সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোর দেবর্বমা, তিপ্রা মথার দলের আহবায়ক জগদীশ দের্ববমা, বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য ও রাজ্য প্রশাসনের বরিষ্ঠ আধিকারিকগণ।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা বলেন , আজ আগরতলা রাজভবনে ত্রিপুরা মন্ত্রী সভার সদস্য হিসাবে অনিমেষ দেববর্মা মহোদয় এবং প্রতিমন্ত্রী হিসাবে বৃষকেতু দেববর্মাকে শপথ নেওয়ার জন্য অভিনন্দন। পাশাপাশি তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গৃহমন্ত্রী অমিত শাহকে রাজ্যের সামগ্রিক বিকাশে এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য।তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, “এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা, উন্নত ত্রিপুরা” গড়ার ক্ষেত্রে তিপরা মথার সরকারে অন্তর্ভুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এদিন তিনি আরও বলেন, খুব শীঘ্রই মন্ত্রীদের দফতর বণ্টন করা হবে।
এই বিষয়ে সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ত্রিপুরা সরকারের মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার জন্য অনিমেষ দেববর্মা এবং বৃষকেতু দেববর্মাকে আন্তরিক অভিনন্দন।
এদিন শ্রী দেব দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে বলেন, নিশ্চিত যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশনায় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের তাঁর দূরদর্শী নীতির অধীনে আপনারা উভয়েই ত্রিপুরাকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তরপূর্বাঞ্চলের মধ্যে ত্রিপুরাকে সমৃদ্ধশালী করে তুলতে চাইছেন। সেখানে জনজাতিদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।
এদিন তিনি আরও বলেন, বিজেপি সরকার বিশ্বাস করে জনজাতি বিকাশের মাধ্যমে ত্রিপুরাকে সমৃদ্ধশালী করে তোলা সম্ভব। তা আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। আগামীদিনে ত্রিপুরার স্বার্থে একত্রে কাজ করে যাব।
তিপরা মথার প্রাক্তন সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, আমাদের লক্ষ্য একই রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র ও ত্রিপুরা সরকরের সাথে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরের পর মথার দুইজনকে মন্ত্রিসভায় পাঠানো হয়েছে। ক্যাবিনেট বৈঠকে তাঁরা জনগনের স্বার্থে কথা বলবেন। তাছাড়া, ক্যাবিনেটের বাইরে জনজাতিদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আমার লড়াই জারি থাকবে।
তাঁর কথায়, দুই বিধায়ক মন্ত্রী সভায় যোগ দিলেও তিনি কখনো বিজেপিতে যোগ দেবেন না। তিনি বাইরে থেকে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ বজায় রাখবেন। বিগত দিনে আইপিএফটি যে ভুল করেছিল সেই ভুল পুনরায় হবে না। মন্ত্রীসভায় যোগদান করার পর আইপিএফটির বিধায়করা জনজাতিদের অধিকারের আদায়ের লড়াই করা ভুলে গিয়েছিলেন।
এদিন তিনি আরও বলেন, আগামীদিনে দিল্লিতে জনজাতিদের পক্ষে কথা বলার জন্য লোক পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
এদিন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর নিজ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন মন্ত্রী অনিমেষ দেব্বর্মা। এদিন তিনি বলেন, মানুষকে সাহায্য করে আমাদের একমাত্র কাজ। দলের লক্ষ্য একই রয়েছে। প্রত্যেক দলের নিজস্ব দাবি থাকে। দল কোনোদিন একার নয়। তিপরা মথার সুপ্রিমো যেই সিদ্ধান্ত নেবেন আমাকে সেই দিকেই যেতে হবে।
এদিন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর নিজ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন বৃষকেতু দেব্বর্মন। এদিন তিনি বলেন, আগামীদিনে জনগণের জন্য কাজ করে যাবেন। জনজাতিদের অধিকারের জন্য যথাসম্ভব লড়াই জারি থাকবে।