গুয়াহাটি, ২৬ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : ‘যতদিন আমি বেঁচে থাকব, অসমে বাল্যবিবাহ চলতে দেব না, এই ব্যবসা বন্ধ করবই’, আজ অসম বিধানসভায় এভাবেই এআইইউডিএফকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
আজ সোমবার অসম বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন ‘আসাম মুসলিম ম্যারেজ অ্যান্ড ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৯৩৫’ (আসাম মুসলিম বিবাহ এবং বিবাহবিচ্ছেদ নিবন্ধন আইন) বাতিল করতে মন্ত্রিসভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের আপত্তি করে সরকারকে চেপে ধরে এর নিন্দা করেছিলেন অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)-এর বিধায়করা। তখন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা গর্জে ওঠে এআইইউডিএফকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, ‘যতদিন আমি বেঁচে থাকব, অসমে বাল্যবিবাহ চলতে দেব না।’ এই ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। এটা সামাজিক কুফল। তা বন্ধ করতে সরকারের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগকে স্বাগত জানানো উচিত মুসলিমদেরও।
অধ্যক্ষকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৩৫ সালের মুসলিম ম্যারেজ অ্যাক্টে ভয়ংকর একটি অনুচ্ছেদ আছে, তাতে পাঁচ থেকে ছয় বছরের ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মুসলমানদেরও ভাবতে হবে, তাঁদের ছেলেমেয়েদের শৈশবে বিয়ে দেওয়ার পরিণতি কী হতে পারে। একবার বাচ্চাদের কথা ভাবুন। তবে এটা ঠিক, আমি ৫-৬ বছর বয়সি মেয়েদের বিয়ে করতে দেব না।’ তিনি বিদ্যমান এই আইনের কযেকটি কুফল সম্পর্কেও তথ্য তুলে ধরেছেন বিধানসভা।
মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, বিষয়টি এখনও বিধানসভায় আনা হয়নি। মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মাত্র। তার মধ্যেই এত হইচই, আশ্চর্য !
প্রচণ্ড ক্ষোভ ঝেড়ে উচ্চৈঃস্বরে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা এআইইউডিএফ, কংগ্রেস সহ সব বিরোধীদের ‘বাল্যবিবাহের নামে অল্পবয়সি মেয়ে ও ছেলেদের বিয়ে করানোর দোকান ও ব্যবসা বন্ধ’ করতে সতর্ক করে দিয়েছেন।
হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে আমি আপনাদের সকলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলছি, ২০২৬ সালের আগেই বাল্যবিবাহের দোকান ও ব্যবসা বন্ধ করে দেব।’
কংগ্রেসকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কী, আপনাদের লজ্জা নেই? আপনারা ৫, ৬, ৭ বছরের বাচ্চাদের বাল্যবিবাহের পক্ষে কথা বলছেন? সমাজের কথা একটু ভাবতে শিখুন। এই সব বাচ্চারা আপনাদেরও কেউ্।’
প্রসঙ্গত, প্রথমে অসমিয়া ভাষায় এআইইউডিএফ-কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেও বক্তৃতা দিতে গিয়ে আচমকা মুখ্যমন্ত্রী গোটা দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হিন্দিতে ‘আসাম মুসলিম ম্যারেজ অ্যান্ড ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৯৩৫’ সম্পৰ্কে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।