প্রত্যন্ত এলাকায় ভেঙে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা 

কাঞ্চনপুর, ২৫ ফেব্রুয়ারি: এডিসির স্কুলগুলির পড়াশোনা লাঠে উঠেছে। অধিকাংশ শিক্ষকরা স্কুলে যায় না। ঘরে বসেই বেতন নিচ্ছেন। এমনই অভিযোগ মিলেছে। 

 গত বছর  দিল্লী থেকে আসা  ট্রাইবেল ওয়েলফেয়ারের  জাতীয় কমিশনের সচিব অনন্ত নায়েক  কাঞ্চনপুর মহকুমার বেশ কয়েকটি স্কুলে পরিদর্শন করে চাক্ষুষ করেছিলেন। তিনি প্রত্যক্ষ করেছিলেন প্রত‍্যন্ত এলাকায় ভেঙ্গে পড়েছে এডিসি শিক্ষা ব‍্যবস্থা। 

এডিসি এলাকার প্রত‍্যন্ত এলাকার স্কুলগুলির ক্লাশ টু থ্রির অধিকাংশ  ছাত্রছাত্রীরা তাদের নিজের নাম  পযর্ন্ত লিখতে পারে না। তখন এডিসি কতৃপক্ষ সবকিছু ঠিক করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নায়েককে। কিন্তু পরিস্থিতি বর্তমানে আরো খারাপ। 

এডিসির পরিকাঠামোগত সমস্যা কারনে প্রাইমারির পরই পড়াশোনা শেষ করতে  বাধ্য হচ্ছ প্রত‍্যন্ত পাহাড়ের  উপজাতি অংশের বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীরা। এডিসি এলাকার শিক্ষার উন্নয়নে পরিকল্পনাবিদদের যে দুরদর্শিতা থাকা দরকার তা লক্ষ‍্য করা যাচ্ছে না। শিক্ষক সংকট এবং এডিসির  শিক্ষা বিভাগের দায়িত্ব হীনতার কারনে নামসর্বস্ব শিক্ষা হয়ে দাড়িয়েছে প্রত‍্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলিতে।

 বৎসরের পর বৎসর ধরে স্কুল ইন্সপেক্টর থেকে শুরু করে শিক্ষা দপ্তরের কোন আধিকারিক এডিসির প্রত‍্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলিতে পরিদর্শন করেছেন বলে কোন রেকর্ড নেই। দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনপুর এলাকার এমন অনেক স্কুল আছে সেখানের পাঠরত ছাত্রছাত্রীরা নিজের নাম ঠিকানা পযর্ন্ত লিখতে পারে না। শিক্ষা ব‍্যবস্থা কার্যত লাঠে উঠেছে। শিক্ষা ব‍্যবস্থার মান ক্রমশ নিচে নামছে। কাঞ্চনপুর এলাকায় অধিকাংশ শিক্ষকরা স্কুলে যায় না মাসের পর মাস ধরে। 

পূর্ব ভান্ডারীমা শাকান সেরমুন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা  কবে ক্লাশ করেছে তা এলাকার মানুষ জানে না। ছাত্রছাত্রীরা শুধু মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য স্কুলে যায় আবার বাড়ি ঘরে ফিরে আসে। এর জন‍্য প্রক্সি দিয়ে লোক রাখা হয়েছে। কাঞ্চনপুরে এডিসি পরিচালিত একশ পঞ্চাশটি স্কুল আছে। 

এর মধ্যে অর্ধেক স্কুলে দুজন করে মাত্র শিক্ষক আছে । এই স্কুলগুলির মধ্যে উনত্রিশটি এস বি স্কুল এবং  কুড়িটি জেবি স্কুল । জেবি স্কুলে প্রতিদিন  মোট উনিশটি বিষয়ে উনিশটি ক্লাস এসবি স্কুলে প্রতিদিন ছয়ত্রিশটি করে ক্লাশ। ফলে দুজন শিক্ষক দিয়ে কোন অবস্থায় ক্লাশ নেওয়া সম্ভব নয়। বৎসরের পর বৎসর ধরে এই অবস্থা চলছে। স্কুল গুলিতে কোন ক্লাস হয় না। 

শুধু তাই নয় এডিসি কাঞ্চনপুর ইন্সপেক্টরের আয়তাধীন সাতাশটি জেবি স্কুলে একজন করে শিক্ষক আছে। প্রতিদিন পাচটি করে ক্লাশ ওয়ান থেকে ফাইভ পযর্ন্ত উনিশটি বিষয়ে  ক্লাশ নেওয়া একজন মাত্র শিক্ষক দিয়ে কোন ভাবেই সম্ভব নয়। ফলে ভেঙ্গে পড়েছে কাঞ্চনপুরের পাহাড়ি এলাকার শিক্ষা ব‍্যবস্থা। শুধুমাত্র কাঞ্চনপুর এডিসি স্কুল ইন্সপেক্টরের আয়তাধীন এলাকার স্কুলগুলিতে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে গোটা এডিসি এলাকায় শিক্ষা ব‍্যবস্থা কি রকম চলছে তা অনুমান করা যাচ্ছে সহজে। 

 এডিসির প্রতিটি স্কুলেই শিক্ষক সংকটের চিত্র  রীতিমতো উদ্বেগজনক। রাজ্যের বিরোধী দল নেতা যিনি নাকি পাহাড়ের মানুষের কথা বলেন কিন্তু আশ্চর্য জনক ভাবে পাহাড়ের বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তার কোন বুলি নেই।