ধেমাজি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুভারম্ভ মিশন বসুন্ধরা ২.০
ধেমাজি (অসম), ২২ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : রাজ্য জুড়ে ২ লক্ষ ২৯ হাজারের বেশি পরিবারকে জমির পাট্টা দেবে অসম সরকার, ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। আজ ধেমাজিতে মিশন বসুন্ধরা ২.০-এর জমির পাট্টা বিতরণ কার্যসূচির শুভারম্ভ করে মুখ্যমন্ত্ৰী দশজন ভূমিপুত্রের হাতে তুলে দিয়েছেন জমির পাট্টা সংক্রান্ত নথিপত্র।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা বলেন, ধেমাজি বিধানসভা এলাকায় ১২,৫১০ এবং জোনাই বিধানসভা এলাকায় ১৩,৩৪৭ জন ভূমিপুত্ৰকে প্রদান করা হবে জমির পাট্টা৷ তিনি বলেন, মিশন বসুন্ধরা-২.০-এর অধীনে ধেমাজি জেলায় গোটা অসমের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক মোট ৩৮,১২৩ জনের ভূমির অধিকার ইতিমধ্যে নিশ্চিত হয়েছে। এই সকল ভূমিপুত্রকে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে পাট্টা বিতরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তিনি, বলেন, মুখ্যমন্ত্ৰী৷
ড. শর্মা বলেন, ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বরে সূচনা হয়েছিল মিশন বসুন্ধরা। এর পর আজ মিশন বসুন্ধরা ২.০-এ পর্থন্ত ভূমিহীন খিলঞ্জিয়া (ভূমিপুত্র) এবং সমাজের দুর্বল শ্রেণির পরিবারবর্গকে তাদের জমির ন্যায্য মালিকানা সুরক্ষিত করার মাধ্যমে ক্ষমতায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পটি ভূমিহীন তফশিলি উপজাতি, তফশিলি জাতি, দিব্যাঙ্গ ব্যক্তি, উপার্জনহীন বিধবা এবং নিয়মিত আয় নেই এমন চাষিদের জন্য প্রচলন করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মিশন বসুন্ধরা ২.০-এর প্রাথমিক উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে একটি হলো বংশানুক্রমিক জমির অধিকারী ভূমিপুত্রদের জমির অধিকার সুরক্ষিত করা। তিনি বলেন, অসম সরকারের ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনজাতিরা ছাড়াও মরান মটক জনগোষ্ঠীয় পরিবারগুলি জমির পাট্টা পাবেন। জনজাতিদের ৬০ বিঘা পর্যন্ত পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য ক্যাবিনেট।
এছাড়া বসুন্ধরা ৩.০-এর অধীনে চা জনগোষ্ঠী, গোৰ্খাদের তিন প্ৰজন্মের পরিবৰ্তে সরাসরি পাট্টা পাবেন৷ তিনি আরও বলেন, জমির রেকর্ড নেই, এমন গ্রামগুলিও আগামী এক বছরের মধ্যে পাট্টা পেয়ে যাবে৷ এজমালি পাট্টার ক্ষেত্ৰে আলাপ-আলোচনা করে ভাগ ভাগ করে দেওয়া হবে বসুন্ধরা ৩.০-এর অধীনে৷ তিনি বলেন, অসমে মাটির দালাল নিশ্চিহ্ন করা হবে।
অন্য প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ৩, ৪ এবং ৫ মাৰ্চের মধ্যে ‘লাখপতি বাইদেউ’ (লক্ষপতি বোন)-দের ফৰ্ম জমা দিতে হবে৷ ‘মুখ্যমন্ত্ৰী আত্মনিৰ্ভরশীল’ প্রকল্পের ইন্টারভিউ আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শুরু হবে বলেও জানান তিনি। এ কাজ ৪৫ দিনে সম্পূৰ্ণ করতে ডিস্ট্রিক্ট কমিশনারদের আহ্বান জানান ড. শর্মা৷
এদিকে নরেন্দ্ৰ মোদীকে আরেকবার প্ৰধানমন্ত্ৰী করতে জনতার আৰ্শীবাদ যাচ্ঞা করে মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, রেশন কাৰ্ডভুক্তরা যাতে প্ৰধানমন্ত্ৰীর ইনস্যুরেন্স কাৰ্ডের মাধ্যমে দু লক্ষ টাকা পান, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করেছে সরকার৷ এছাড়া ছাত্ৰীদের বিনামূল্যে অ্যাডমিশন ছাড়াও দশ হাজার টাকা করে দেওয়ার পাশাপাশি অসমে আর কোনও সুদখোর থাকবে না বলে হুংকার দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আজ দুপুর ১২টায় ধেমাজির কাছারি ময়দানে জমির পাট্টা বিতরণ করে বেলা ২.৩০টায় সিমেন চাপরিতে অবস্থিত এসবি বড়ো উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ময়দানে গিয়ে আরেকটি অনুষ্ঠানে জমির পাট্টা বিতরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা৷
বিগত কয়েক দশক ধরে পাট্টাহীন মানুষ আজ তাঁদের হাতে নিজের নামে জমির পাট্টা পেয়ে মুখ্যমন্ত্ৰীকে অকৃত্রিম ধন্যবাদ জানিয়েছেন।