নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ ফেব্রুয়ারি : ৭ দিনের শিশুর অস্ত্রোপচার করে শিশুটিকে নতুন জীবন দিলেন ডঃ অনিরুদ্ধ বসাক। ডাক্তারের পরিষেবায় খুশি হয়ে সদ্যজাত শিশুর নাম ডাক্তারের নামে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন শিশুর পিতা। বর্তমানে শিশুটি সঙ্কটমুক্ত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা গিয়েছে , গত ১০ জানুয়ারি শিশুটির জন্ম হয়েছিল ধলাই জেলা হাসপাতালে। তবে জন্ম হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে ক্রমাগত সবুজ রং-এর বমি করছিল শিশুটি। শিশুটির অবস্থা সূচনীয় দেখে ধলাই জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা শিশুটিকে ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেছেন। সেখানে গত ১৫ জানুয়ারি টিএমসির সার্জেন ডঃ অনুরুদ্ধ বসাকের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় শিশুটির চিকিৎসা।
এই অস্ত্রোপচার সম্পর্কে ডঃ অনুরুদ্ধ বসাক জানিয়েছেন, ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাচ্চাটির বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়। সমস্ত পরীক্ষা করানোর পর দেখা যায় বাচ্চাটি জেজুনাল এট্রোসিয়া টাইপ-৩ রোগে আক্রান্ত। এই রোগের চিকিৎসা হচ্ছে সার্জারি। তারপরেই গত ১৮ জানুয়ারি শিশুটির অস্ত্রোপচার হয়। ডঃ অনিরুদ্ধ বসাক এবং তার সহযোগী টিমের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়েছে এই অস্ত্রোপচার। প্রায় ২ ঘণ্টা চলে এই অস্ত্রোপচার। ডঃ অনিরুদ্ধ আরো জানিয়েছেন, বর্তমানে সম্পূর্ণ বিপদ মুক্ত অবস্থায় রয়েছে শিশুটি। আর কয়েকদিনের মধ্যেই তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে। এধরনের অস্ত্রোপচার এর আগেও বার কয়েক তিনি সম্পন্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন।
এই অস্ত্রোপচার সম্পর্কে শিশুর পিতা বলেন, শিশুর জন্মের পর থেকেই তার সমস্যার কারণে খুবই চিন্তিত ছিলেন গোটা পরিবার। তিনি আর্থিকভাবে তেমন সক্ষম না থাকায় আরও চিন্তা বাড়ছিল। তবে চিকিৎসকদের চেষ্টায় তিনি আশা ফিরে পেয়েছেন। নিজের সন্তানকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন না ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি তবে চিকিৎসকদের সাহায্যে তিনি আবার নিজের সদ্যজাতকে ফিরে পেলেন। তিনি আরও বলেন, ধলাই জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক নিজ টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে তাদের টিএমসিতে পাঠিয়েছেন। টিএমসিতে এসে ডঃ অনিরুদ্ধ এবং হাসপাতালের কর্মীদের সার্বিক সাহায্যে তিনি এই তার সন্তানের জটিল অস্ত্রোপচার করাতে পেরেছেন। তিনি বলেন, তিনি ডাক্তারবাবুকে কথা দিয়েছিলেন ছেলেকে সুস্থ করে নিয়ে যেতে পারলে ডাক্তারবাবুর নামেই তার নাম রাখবেন। আর রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার দৌলতে তিনি নিজের সন্তানকে আর কিছুদিনের মধ্যেই সুস্থ অবস্থায় বাড়ি নিয়ে যাবেন।
চিকিৎসকের দায়িত্ব রোগীকে পরিষেবা প্রদান করা। তবে একজন রোগীর পরিবারের কাছে ডাক্তারই ভগবান। ডঃ অনিরুদ্ধ বসাকের মতো চিকিৎসকরা প্রতিনিয়ত নিজেদের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে এভাবেই হাসি ফোটাচ্ছেন রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। চিকিৎসকদের হাত ধরেই এভাবেই তরান্বিত হচ্ছে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা।