ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষায় জেলিয়াংরং হেরাক্কা সংস্থার কৰ্মকাণ্ড অতি প্রংশসনীয় : রাজ্যপাল গুলাবচাঁদ

হাফলং (অসম), ৬ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : জ্ঞান ও গুণের সমাহারে আমরা প্রথমে বিশ্বগুরু ছিলাম। এবার ধর্ম ও সংস্কৃতির মাধ্যমে বিশ্বগুরু হওয়ার প্রচেষ্টা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। ডিমা হাসাও জেলা সদর হাফলঙের পার্শ্ববর্তী লোদিরাম গ্রামে চলমান উত্তরপূর্ব জেলিয়াংরং হেরাক্কা অ্যাসোসিয়েশনের সুবর্ণজয়ন্তী তথা ৪২-তম সাধারণ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদত্ত ভাষণে বলেছেন অসমের রাজ্যপাল গুলাবচাঁদ কাটারিয়া।

আজ মঙ্গলবার গুয়াহাটির রাজভবন থেকে হেলিকপ্টারে হাফলঙে আসাম রাইফেলস-এর হেলিপ্যাডে অবতরণ করে রাজ্যপাল কাটারিয়া সোজা চলে যান লোদিরাম গ্রামে জেলিয়াংরং হেরাক্কা অ্যাসোসিয়েশনের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানস্থলে। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, জেলিয়াংরং হেরাক্কা অ্যাসোসিয়েশন গত ৫০ বছরে গৌরবান্বিত অধ্যায়কে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। বলেন, হেরাক্কা অ্যাসোসিয়েশন হচ্ছে এক ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন।

রাজ্যপাল বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামী হাইপু জাদুনাঙের নেতৃত্বে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে হেরাক্কা আন্দোলন শুরু হয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার হেরাক্কা আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে ১৯৩১ সালে হাইপু জাদুনাংকে গ্রেফতার করে ফাঁসি দিয়েছিল। তবুও হেরেক্কা আন্দোলন থামেনি, বরং আরও তীব্র রূপ নেয় রানিমা গাইদিনলিউয়ের নেতৃত্বে। রানিমা দেশ ও সমাজের প্রতি সমর্পণের ভাবনায় লড়াই অব্যাহত রেখেছিলেন। তিনি দেশের স্বাধীনতার জন্য জেলিয়াংরং জনগোষ্ঠীকে উৎসাহ দিয়ে গেছেন। সেজন্য রানিমা গাইদিনলিউকে ১৯৩১ সালে জেলে যেতে হয়েছিল। তিনি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ভারত স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত কারাগারে বন্দি ছিলেন, বলেন রাজ্যপাল গুলাবচাঁদ কাটারিয়া।

কাটারিয়া বলেন, ১৯৭৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জেলিয়াংরং হেরাক্কা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রানিমা গাইদিনলিউ। ধর্ম ও দেশকে রক্ষা করতে রানিমা যে কাজ করে গেছেন তার জন্য তিনি আজ আমাদের সবার হৃদয়ে রয়েছেন। রাজ্যপাল বলেন, ধর্ম ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হেরাক্কা সংগঠনের মাধ্যমে জেলিয়াংরং জনগোষ্ঠী যে কাজ করে যাচ্ছে তা অতি প্রংশসনীয়।

তিনি বলেন, শুধু ডাক্তার আর ইঞ্জিনিয়ার হলেই হবে না, দেশ ও সমাজকে শক্তিশালী করতে হলে সংস্কারিত হতে হবে। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে শুধু পেট ভরার কাজ করলে হবে না। জেলিয়াংরং হেরাক্কা সংগঠন সমাজকে শক্তিশালী করতে যে প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে তার প্রশংসা করেন রাজ্যপাল গুলাবচাঁদ কাটারিয়া।

এদিন প্রথমে লোদিরাম গ্রামে উপস্থিত হয়ে রাজ্যপাল গুলাবচাঁদা কাটারিয়া অনুষ্ঠানস্থলে স্বাধীনতা সংগ্রামী হাইপু জাদুনাং ও রানি মা গাইদিনলিউয়ের প্রতিচ্ছবিতে পূষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য দেবোলাল গার্লোসা, বিশ্বহিন্দু পরিষদের উত্তরপূর্ব প্রান্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ড. দীনেশ তিওয়ারি, পদ্মশ্রী ড. রামকুয়াংবে জেমি, ডিমা হাসাওয়ের জেলাশাসক সীমান্ত কুমার দাস, পুলিশ সুপার ময়ঙ্ক কুমার প্রমুখ বহুজন।