, কমলপুর, ৬ ফেব্রুয়ারি: চন্ডিগড়ের একটি সংস্থা আল্ট্রা ফিনান্স প্রাইভেট লিমিটেড নাম করে এক ব্যক্তি মানিকভান্ডার বাজারে অফিস খুলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সবকিছু জেনেশুনেও প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছে।
রাজ্যে চিটফান্ডের রমরমা ছিল। এখনো যে নেই তা বলা যায়না।এখন কিছুটা কম। কিন্তু তারপরও রাজ্যে লোন দেবার নাম করে পাঞ্জাবের চন্ডিগড়ের একটি সংস্থা আল্ট্রা ফিনান্স প্রাইভেট লিমিটেড নাম করে এক ব্যক্তি মানিকভান্ডার বাজারে অফিস খুলে মানুষকে দশ লক্ষ, পনেরো লক্ষ, কুড়ি লক্ষ টাকা লোন দেবার নাম করে ফাইল ফি, প্রসেসিং ফি’র নামে কারো কাছ থেকে ৯২ হাজার টাকা, কারো কাছ থেকে ৩৮ হাজার টাকা, কারো কাছ থেকে ৪৭ হাজার টাকা অগ্রিম হাতিয়ে নিয়েছে জনৈক রাজেশ সিংহ। এমনই অভিযোগ উঠেছে।
সে নাকি ত্রিপুরার সেলস এক্সেকিউটিভ?সে আসলে বেতছড়ার বাসিন্দা। কমলপুরের মানিকভাণ্ডারে শশুর বাড়িতে থাকে। সে মানিকভাণ্ডারে একটি দোতলা ঘর ভাড়া নিয়ে তিনচারজন যুবতিকে কর্মী হিসাবে রেখে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তাদের কাছ থেকেও তিন হাজার টাকা করে অগ্রিম নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে যুবতিদের যে নিয়োগ করা হয়েছে তাদেরকে কোনো নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়নি। এরমধ্যে একজনকে ৬০০০ টাকা বেতন দেওয়া হয়েছে মাত্র একমাস।
তবে রাজেশ সিংহ ‘র কাজ কারবার দেখে মানিকভাণ্ডারের ফ্রেন্ডস ক্লাব ‘র সদস্যরা কয়েকদিন যাবৎ নজর রাখছিলো। গতকাল তারা সেখানে হানা দিয়ে মিডিয়া ও পুলিশ কে খবর দেয়। সেখানে পৌঁছে দেখা যায় সে কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। শুধু তার নিয়োগপত্রের কপি ও ঐ সংস্থার লিফলেট দেখাচ্ছে।
ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে যান কমলপুর এস ডি এম অফিস ‘র ডি সি এম জিনাপ্রসাদ বড়ুয়া, এস আই বাবুল মহাজন, সুরজিৎ সরকার সহ পুলিশ। সেখানে রাজেশ সিংহ নানা কাগজ দেখালেও বৈধ কিছু দেখাতে পারেনি। লোন পাবার আশায় বিলাসছড়ার দুলু বেনিয়া অগ্রিম দিয়েছে ৪৭,৭০০টাকা, কলাছড়ির বাপ্পা দাস দিয়েছে ৯২,৪৭০ টাকা, পায়েল নমশুদ্র নামে এক গৃহবধূ দিয়েছে ৩৮,০০০টাকা। সবই নেওয়া হয়েছে ফাইল ফী এবং প্রসেসিং ফী বাবদ। এমন আরো অনেক লোক আছে। যাদের বলা হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা দেওয়া হবে। লোন পাবার আগে টাকা দেওয়ার বিধান কোথাও আছে বলে প্রচলিত নেই। পুলিশ গভীর রাত পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। এখন দেখার পুলিশি তদন্তে কি বেরিয়ে আসে।
উল্লেখ্য, রাজেশ সিংহ বেতছড়ার বাসিন্দা। সে মানিকভান্ডার শশুর বাড়ি থাকে। তবে সবার ধারণা যে এটা অবৈধ একটি সংস্থা। এখন দেখার পুলিশি তদন্তে কি বের হয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রাজেশ সিংহ যখন তার উর্ধতন কতৃপক্ষকে ফোন করে ঘটনা জানিয়ে ডিসিএম জিনাপ্রসাদ বড়ুয়া ‘র সাথে কথা বলায় তখন জিনাপ্রসাদ বড়ুয়া তাদেরকে কাগজপত্রের কথা বললে ঐ ব্যক্তি জানান তারা নাকি কাগজপত্রের জন্য অবিলম্বে আবেদন করবে। অর্থাৎ বৈধ কোনো নথি ছাড়াও এখন পর্যন্ত হাজার হাজার টাকা সাধারন মানুষ থেকে নিয়েছে এই রাজেশ সিংহ।