বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট

নয়াদিল্লি, ২৯ জানুয়ারি, (হি.স.): রাজ্য সরকার ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই দুঁদে আইনজীবী আবেদন জানালেও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে চাইল না সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট যে কথা বলেছে, তার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অবস্থান মজবুত হল বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিচারপতির ব্যাপারে কোনওরকম হস্তক্ষেপও করল না। বরং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ জন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ জানিয়ে দিল, এটা কলকাতা হাইকোর্টের বিষয়। কলকাতা উচ্চ আদালতের ব্যাপারে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের প্রশাসনিক অধিকার রয়েছে। কিছু করার হলে তিনিই করবেন।

ভুয়ো জাতি শংসাপত্র দেখিয়ে মেডিক্যালে ভর্তির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা চলছিল। ওই মামলাকে কেন্দ্র করে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেনের মধ্যে নজিরবিহীন সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। তা এতদূর গড়ায় যে বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে লিখিত নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাতে তিনি অভিযোগ করেন, বিচারপতি সেন একটি রাজনৈতিক দলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্তে বাধা দিচ্ছেন।

এই অবস্খায় সংঘাতে আপাতত ইতি টানতে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ ওই মামলা কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে স্থানান্তরিত করার জন্য এদিন নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল তাঁর সওয়ালে বলেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এ ধরণের আরও মামলা রয়েছে। এর আগে টিভিতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেও তিনি নানারকম পর্যবেক্ষণ দিয়েই চলেছেন। তাই তাঁর এজলাস থেকে অন্যান্য মামলাও সরানো হোক।

আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি তাঁর সওয়ালে বলেন, এই মামলার সূত্রে তাঁর মক্কেলের নাম বারবার টানা হচ্ছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কোনও প্রসঙ্গ ছাড়া বারবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে নানান মন্তব্য করছেন। তাঁকে বিরত করা হোক। তা ছাড়া এই মামলায় পক্ষ হতে চেয়ে আবেদনও করেছেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।

কিন্তু দুই দুঁদে আইনজীবী সওয়াল করা সত্ত্বেও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাপারে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ। বরং জানিয়ে দিয়েছে, কলকাতা মামলা কার বেঞ্চে যাবে তা স্থির করার এক্তিয়ার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির রয়েছে।

তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণের ব্যাপারে কদিন আগে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেছিলেন, কারও ইচ্ছা হতেই পারে চাঁদ পেড়ে আনার। সেটা তিনি পারবেন কিনা দেখা যাক।