কলকাতা, ২৪ জানুয়ারি (হি.স.) : পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের হয়ে বুধবার আদালতে সওয়াল করছিলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। তাঁকে দেখে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি প্রশ্ন করলেন, ‘‘আপনি এঁদের হয়ে সওয়াল করছেন কেন? আপনি তো রাজ্যের এজি!’’
বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে শুনানি ছিল নিয়োগ মামলার দুই মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ এবং ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের। সেই মামলায় পার্থবাবু এবং সুজয়বাবু দু’জনের জামিন চেয়ে আদালতে সওয়াল করছিলেন রাজ্যের এজি। স্বাভাবিক ভাবেই বিচারপতি বিস্মিত হন। রাজ্যের প্রতিনিধি কেন নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল করছেন তা জানতে চান এজির কাছেই। প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনার কাছে অনুমতি আছে?’’
আসলে রাজ্যের এজি পদে স্থলাভিষিক্ত হওয়ার অনেক আগে থেকেই পার্থবাবু এবং সুজয়বাবুর জামিনের মামলা হাই কোর্টে লড়ছেন কিশোরবাবু। সেই মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ইতিমধ্যে রাজ্যের নতুন এজি পদে দায়িত্ব নেন তিনি। তার পরে বুধবার পার্থবাবু এবং সুজয়বাবুর জামিনের শুনানি পড়ে। নিজের হাতে থাকা পুরনো মামলা নিজেই লড়তে এসেছিলেন আইনজীবী। কিন্তু সওয়াল করতে এসেই বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি।
বিচারপতি ঘোষ বুধবার তাঁকে বলেন, ‘‘আপনি যদি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী হিসাবে সওয়াল করতে চান তবে রাজ্যের কাছ থেকে আপনাকে বিশেষ অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। রাজ্য যদি অনুমতি দেয়, তবে আদালতের কোনও অসুবিধা নেই।’’ একই নির্দেশ ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়বাবুর মামলাতেও দেন বিচারপতি ঘোষ। দু’টি জামিনের মামলাই একই কারণে মুলতবি হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, বিচারপতি ঘোষই প্রথম নিয়োগ মামলায় জামিন দিয়েছিলেন বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যকে। তার পর থেকে মানিকবাবু, তাঁর পুত্র-সহ নিয়োগ মামলার অভিযুক্তদের অনেকেরই জামিনের আবেদন জমা পড়ে তাঁর এজলাসে। পার্থবাবু এবং সুজয়বাবুর মামলারও শুনানি চলছিল এখানেই। কিন্তু বুধবার সেই দু’টি মামলাতেই কোনও সুরাহা হল না। বিচারপতি ঘোষ জানিয়েছেন, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পার্থবাবুর জামিনের মামলার শুনানি হবে। সুজয়বাবুর মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখে।