“লিঙ্গ পরিবর্তন”, “লিভ ইন” ভারতীয় সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র : ত্রিপুরার পরিষদীয় মন্ত্রী

আগরতলা, ৮ জানুয়ারি : দেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে ভারতীয় সমাজে লিঙ্গ পরিবর্তন, লিভ ইন রিলেশনশিপ ইত্যাদির মতো অনুশীলনগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে। বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় রাজ্যপালের ভাষণের উপর ধন্যবাদসূচক বক্তব্যে এই দাবি করেছেন ত্রিপুরার পরিষদীয় মন্ত্রী রতন লাল নাথ। তাঁর কথায়, লিঙ্গ পরিবর্তন একটি নতুন আমদানীকৃত খারাপ প্রবণতা যা এই দেশে শুরু হয়েছে। পুরুষ এবং মহিলারা কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে তাঁদের শারীরিক গঠনের পরিবর্তন করছেন। এটা প্রকৃতির নিয়মের পরিপন্থী। একইভাবে, লিভ ইন রিলেশনশিপও সমাজের একাংশের দ্বারা সমর্থন করা হচ্ছে। এই সমস্ত জিনিসগুলি আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার জন্য ভারতের প্রতি ঈর্ষান্বিত দেশগুলির দ্বারা তৈরি সুনিপুণ ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।

তাঁর বক্তব্য, রাজ্য সরকারের নীতি, স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি ও কাজের সাফল্য রাজ্যপালের ভাষণে ফুটে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, আমরা একসাথে হাঁটব, একসাথে চলব, একসাথে ভাবব, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদে প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করেছেন। রাজ্যপাল বলেছেন, সমাজের সকল অংশের মানুষের বিকাশ ও দেশের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া, জনকল্যাণে উদ্ভাবনীমূলক প্রযুক্তির ব্যবহার ও পরিকাঠামো উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে দেশ ২০২৬-এর মধ্যে ৫ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের অর্থনীতি গড়ে তোলার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি ১৩তম ত্রিপুরা বিধানসভার তৃতীয় অধিবেশনের প্রথম দিনে রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেডিড নাল্লু ভাষণ দিয়েছিলেন। আজ রাজ্যপালের ভাষণের উপর আনা ধন্যবাদসূচক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সূচনা করেন পরিষদীয় মন্ত্রী রতনলাল নাথ।

পরিষদীয় মন্ত্রী রতনলাল নাথ আলোচনার শুরুতেই বিরোধী দলের সদস্যদের আনা সংশোধনী প্রস্তাবগুলির বিরোধিতা করেন এবং রাজ্যপালের ভাষণের পূর্ণ সমর্থন জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, আমাদের দেশে ৪টি জাতি। মহিলা, গরীব, কৃষক ও যুবক। বিশেষ করে তাদের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করছে। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার সাফল্যের তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আত্মনির্ভর ভারত গড়ার কাজ চলছে। ভারত বিশ্বগুরু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে।

আলোচনা করতে গিয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শগুলি আমাদের সবার গ্রহণ করা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দিশায় আমরাও কাজ করছি। রাজ্যের মানুষকে আত্মনির্ভর করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়ণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সারা রাজ্যে ৪৭,২০৮টি স্বসহায়ক দল গঠন করা হয়েছে। এই দলগুলির সঙ্গে যুক্ত ৮৩ হাজার মহিলা লাখপতি দিদি রয়েছেন। এটা হলো ঘরে ঘরে রোজগারের উদাহরণ। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বেকারত্বের হার হ্রাস, কৃষি, স্বাস্থ্য, পানীয়জলের সুযোগ সম্প্রসারণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, রেগার মজুরি বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন। আজ বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা ও বিধায়ক শ্যামল চক্রবর্তী।