আগরতলা, ২৭ ডিসেম্বর : মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা জনগণের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে ‘মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু’ কর্মসূচিতে সমস্যা পীড়িত মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ‘মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচির’ ২৪ তম পর্বে আজ মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জনগণের নানাবিধ সমস্যা, অভাব ও অভিযোগ শুনেন। এদের মধ্যে সিংহভাগই এসেছেন চিকিৎসার সহায়তার আর্জি নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখে সাথে সাথেই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যার সুরাহা করে দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আসা সবার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন।
আজ মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে বাধারঘাটের ৯০ বছর বয়সী জোৎস্না রানি দাস ন্যায় বিচারের আর্জি নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিই অভিযোগ করেন তাঁর ছেলে অবৈধভাবে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। ফলে সর্বস্বান্ত জোৎস্না রানি দাস বর্তমানে নানা সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী জোৎস্না রানি দাসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেন এবং বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিতে বলেন।
উদয়পুরের মহারাণির বাসিন্দা পুষ্প কুমার জমাতিয়া তার মেয়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তার দ্বিতীয় মেয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত। পুষ্প কুমার জমাতিয়া পেশায় একজন দিনমজুর। তিনি অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার প্রতিপালন করছেন। তাই তার মেয়ের চিকিৎসার খরচ মেটাতে তিনি হিমসিম খাচ্ছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আজ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এসেছিলেন প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আর্জি নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্প কুমার জমাতিয়ার কন্যার চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে সঙ্গে সঙ্গে জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
বড়জলার মাধবী সূত্রধর তার চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্যের আর্জি নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। মাধবী সূত্রধর দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। সম্প্রতি জিবি হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসাও করিয়েছেন। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য তিনি প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনতে পারছেন না।মাধবী সূত্রধরের স্বামী পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী। ফলে সংসারের খরচ চালিয়ে তার চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে তার স্বামী অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তার আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী তার চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে নির্দেশ দেন।
পশ্চিম কাঁঠালিয়ার রূপেশ দাস তাঁর ছেলের চিকিৎসা সংক্রান্ত আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। পেশায় কৃষক রূপেশ দাসের ১১ বছর বয়সী ছেলে কিডনি সংক্রান্ত রোগে ভুগছে। বর্তমানে সে ড: বি আর আম্বেদকর টিচিং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুণ রূপেশ দাস তার ছেলের সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এই অবস্থায় তিনি আর্থিক সহায়তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী রূপেশ দাসের ছেলের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজ দেখে সঙ্গে সঙ্গে জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে রূপেশ দাসকে কিভাবে সহায়তা করা যেতে পারে সে বিষয়টি দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়কে নির্দেশ দেন।
এছাড়াও আজ মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আসা রামনগরের পরিতোষ গোপ, চম্পামুড়ার রাখী দাস, বিশালগড়ের সুরজিৎ সরকার, পশ্চিম নলছড়ের কেশব লাল দাসের মতো অনেকেই পেয়েছেন চিকিৎসায় সহায়তার আশ্বাস। আজ মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তী এবং ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ এস দেববর্মা উপস্থিত ছিলেন।

