কলকাতা, ২৪ ডিসেম্বর (হি.স.): লক্ষ কন্ঠে গীতাপাঠের মঞ্চ থেকে উঠল ‘গীতা’কে জাতীয় গ্রন্থের মর্যাদা দেওয়ার দাবি । রবিবার কলকাতার মর্যাদাপূর্ণ ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে হাজার হাজার সাধু-সন্তের গৈরিক সমাবেশে একাত্ম হয়ে ভগবদ্গীতা পাঠ করলেন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের এক লাখেরও বেশি মানুষ। এদিনের মঞ্চ থেকে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বামী ভগবতী মহারাজ ভগবদ্গীতাকে জাতীয় গ্রন্থ করার দাবি জানান।
এদিনের অনুষ্ঠানের স্বাগত ভাষণে তিনি বলেন,গীতা কোনও একটি ধর্ম বা কোনও একটি দেশের নয়, গীতা সার্বজনীন । বিশ্বজনীন । গীতা কোনও সাধারণ গ্রন্থ নয় । বিশ্বর যে প্রান্তের মানুষ মোহগ্রস্ত হয়েছেন, সংশয়ে পড়েছেন তাকে পথ দেখিয়েছে এই গীতা । গীতা বিশ্ব মানবের দর্শন । শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু থেকে শুরু করে ঋষি অরবিন্দ, সকলেই সমাজ কল্যাণে গীতার শাশ্বতবাণী ছড়িয়েছেন সর্বত্র । গীতার বাণী পাথেয় করে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছেন হাজার হাজার স্বাধীনতা সংগ্রামী… । তিনি বলেন, ভারতের সংবিধানও গীতাকে দিয়েছে যোগ্য সম্মান । যে গীতা কর্মযোগে মানুষকে কর্ম করার বার্তা দেয়, যে গীতা জ্ঞানযোগে মানুষকে মহাজ্ঞানী হওয়ার পথ দেখায়, ভক্তিযোগে ভগবানেলীন হওয়ার কথা বলে, যে গীতা সন্ন্যাসযোগে ভোগী মানুষকে ত্যাগী হওয়ার পথ দেখায়, যে গীতা মোক্ষযোগে দেবতার সঙ্গে লীন হওয়ার কথা বলে । সেই গীতার নৈতিক–আধ্যাত্মিক শিক্ষার অমৃত সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে । এর জন্য তিনি গীতাকে স্কুলের পাঠ্য করার দাবি করেন । সেই সঙ্গে তিনি ‘গীতা’কে জাতীয় গ্রন্থের মর্যাদা দেওয়ার দাবি করেন । তিনি বলেন, ভারত সরকারের প্রতি আমাদের আবেদন ‘গীতা’কে জাতীয় গ্রন্থ হিসেবে ঘোষণা করা হোক । সে সময় ব্রিগেড ময়দানে উপস্থিত সকলে ওম ধ্বনি দিয়ে মহারাজের এই দাবিকে সমর্থন করেন ।
শুধু আজই নয়, এর আগেও একাধিকবার গীতাকে জাতীয় গ্রন্থ ঘোষণা করার দাবি তুলেছে বিভিন্ন সংগঠন । এর আগে বহুবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গীতা’কে জাতীয় গ্রন্থ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে । একই সঙ্গে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বস্তরে এই গ্রন্থ পড়ানো বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছে এই সংগঠন। গীতাকে জাতীয় গ্রন্থ ঘোষণা করার দাবি তুলে ছিলেন দেশের তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী তথা প্রভাবশালী বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজও। এদিনের অনুষ্ঠানে সাধু-সন্তদের মুখে বার বার ফিরেছে গীতার মাহাত্ম্য ।