অশান্তির জেরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, বিরোধিতায় শিক্ষামন্ত্রী

কলকাতা, ১ ডিসেম্বর (হি.স.): লাগাতার হুমকির জেরে বিএড বিশ্ববিদ্যালয় (বাবাসাহেব অম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটি) বৃহস্পতিবার থেকে সাময়িক বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার এর প্রবল বিরোধিতা করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

বিধানসভায় তাঁর ঘরে বসে ব্রাত্যবাবু এক ভিডিও-বার্তায় বলেন, “এটা তো আমি কাল রাতে জানতে পারলাম। পরে বিভাগীয় সচিব বললেন, এই নির্দেশিকা রাতে মেল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন। এটা তো কোনও পন্থা হতে পারে না!

আমার দফতর যদি ঠিকঠাক না চালাতে পারি আমি তো তালা লাগিয়ে চলে যেতে পারি না! তার চেয়ে আমার পদত্যাগ করে চলে যাওয়া ভাল! যদি কোনও সমস্যা হয় তাহলে আমাদের জানান। তবে, তার আগে চ্যান্সেলরকে জানানো উচিত। কারণ তাঁর কথা শুনেই তো এই সব উপাচার্যরা এসেছেন।

আমি এটা নিয়ে দফতরের সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা বলেছি। আমি মনে করি এভাবে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা কোনওভাবে কাম্য ও বাঞ্ছনীয় নয়। এটা ঠিকও নয়। ওপরওয়ালা চ্যান্সেলারের সঙ্গে কথা বলে ওঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা জানিনা! তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা কোনওভাবে সমর্থন করছি না। এখানে কী করা যেতে পারে, তা নিয়ে আইনি পরামর্শ নেব।”

প্রসঙ্গত, উপাচার্যর পদে কেউ না থাকায় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে প্রবল ব্যাঘাত ঘটায় আচার্য তথা রাজ্যপাল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য মনোনীত করেন। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যেই প্রতিবাদ জানায় রাজ্য। শিক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেন, এঁরা ‘অনুপ্রবেশকারী’। আমাদের অনুমতি না নিয়ে এঁদের দায়িত্ব দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। শিক্ষামন্ত্রীর শুক্রবারের বিবৃতিতেও তার স্পষ্ট প্রতিফলন রয়েছে।

গত মাসে শিক্ষকতার পাঠ দেওয়া রাজ্যের ২৫৩টি বেসরকারি বিএড কলেজের সরকারি অনুমোদন আপাতত ‘বাতিল’ করা হয়েছে। এই কলেজগুলির অনুমোদন পুনর্নবীকরণ করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যের বিআর অম্বেডকর বিএড বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অভিযোগ করেছেন, এই পরিস্থিতি তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। যাঁরা হুমকি দিয়েছেন, তাঁরা রাজ্যে কোনও বেসরকারি বা স্বচালিত বিএড বা এমএড কলেজের সঙ্গে যুক্ত। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হতে পারে। তাছাড়া নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রশাসনিক কাজ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য সোমা। প্রশাসনের সহযোগিতায় যত দিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, তত দিন বন্ধ থাকবে প্রশাসনিক কাজ। অসুবিধার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন উপাচার্য। পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা বন্ধ। শুধু প্রশাসনিক কাজ চলছিল। সেটাও বন্ধ হয়েছে।