রংবদলে আটকে গেছে টাকা, মোদীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি মমতার

কলকাতা, ৩০ নভেম্বর (হি.স.) : পশ্চিমবঙ্গে প্রায় সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রের রঙ এখন নীল-সাদা। কারণ, নীল-সাদা হল সরকারের থিম রঙ। এই রঙ চায় না কেন্দ্র। তাদের পছন্দ অন্য রঙ। তই নাকি অনুদান বন্ধ। এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ চেয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দিল্লির ফরমান, কেন্দ্রের আর্থিক বরাদ্দে যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি তৈরি হবে তার রঙ হতে হবে মেটালিক হলুদ। তাতে খয়েরি রঙের বর্ডার থাকতে হবে। এই রঙের ফারাকেই জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন খাতে পশ্চিমবঙ্গের জন্য অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

পশ্চিমবঙ্গের ৪৭৪টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৬৫টি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ২৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির জন্য একাধিক কিস্তিতে টাকা দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গত ১২ বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে ভাল কাজ করছে বাংলা। বর্তমানে রাজ্যে এ ধরনের ১১ হাজার কেন্দ্র রয়েছে। যার মাধ্যমে দিনে গড়ে ৩ লক্ষ মানুষ পরিষেবা পান।

চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, তিনি জানতে পেরেছেন যে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মিশন খাতে কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে। রঙের ব্র্যান্ডিংয়ের বিষয়টিকে সেখানে অন্যতম কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য. নীল-সাদা হল সরকারি রঙ। তা বদল করতে গেলে এখন অনেক অর্থের ধাক্কা। প্রকল্পের ব্যাপারে বাকি শর্তগুলি সরকার ইতিমধ্যে পূরণ করেছে। তাই অর্থ বরাদ্দ বন্ধ না করে তা যেন চালু করে দেওয়া হয়।

অনিয়মের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যে একশ দিনের কাজ ও আবাস যোজনা খাতে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে রেখেছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মিশন খাতে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ হওয়ায় তা রাজ্যের কোষাগারের উপর চাপ ফেলেছে। সূত্রের মতে, প্রায় ৮০০ কোটি টাকার বরাদ্দ আটকে রেখেছে দিল্লি। রাজ্যের শাসক দলের আশঙ্কা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আর্থিক অবরোধ তৈরি করা হচ্ছে। যাতে বাংলায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। তার মাধ্যমে রাজ্যে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে বিজেপি।

এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সাংবাদিকদের বলেন, “কেন্দ্রের টাকায় রাজ্যে প্রকল্প বাস্তবায়িত করে নিজেদের রঙ লাগানো যাবে না। রাজ্যের সরকার মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এই অনিয়ম দূর হলে কেন্দ্র নিশ্চয়ই বরাদ্দ করবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *