চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারিতেও ইডি নোটিশ পাঠিয়েছিল বাপ্পাদিত্যকে

কলকাতা, ৩০ নভেম্বর (হি.স.): আগে আইকোর চিট ফান্ড কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তকে নোটিস পাঠিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বৃহস্পিবার সিবিআই সূত্রে এ কথা জানিয়ে দাবি করা হয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাপ্পাদিত্যর শুধু রাজনৈতিক সম্পর্কই ছিল না। বেআইনি লেনদেনের ব্যাপারেও তাঁর ভালমতো যোগসাজস ছিল।

অভিযোগ ছিল, আইকোর কর্তাকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন বাপ্পাদিত্যই। নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের পুজোয় মোটা অঙ্কের চাঁদা দেওয়া ছাড়াও এই চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে পার্থ-বাপ্পাদিত্যর লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে। সেই মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের আন্দোলিত হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতিতে। এদিন সকাল ৮টা নাগাদ কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তর বাড়িতে পৌঁছে যায় সিবিআই টিম। প্রায় ১৮ মিনিট সিবিআই টিমকে গেটের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখার পর নিজেই দরজা খুলে দেন বাপ্পাদিত্য!

দক্ষিণ কলকাতা ও শহরতলির রাজনীতিতে বাপ্পাদিত্যকে সকলেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভাবশিষ্য বলেই জানতেন। পার্থ যে সংস্থায় কর্মরত ছিলেন, সেখানেই কাজ করতেন বাপ্পাদিত্য। পার্থবাবুই তাঁকে রাজনীতিতে নিয়ে আসেন। শুধু তা নয়, একদা তৃণমূলের মহাসচিবের সুপারিশেই কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জোড়াফুলের প্রার্থী হন বাপ্পাদিত্য। তার পর ভোটে জিতে পাটুলি, বৈষ্ণবঘাটা, ফুলবাগান এলাকার কাউন্সিলর তিনি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে বাপ্পার সম্পর্ক ছিল অতিশয় নিবিড়। নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের পুজোয় বাপ্পাদিত্য ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। যে সময়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে নাকতলা উদয়নের পুজোয় মডেল করা হয়, সেই সময়ে বাপ্পাদিত্যই পুজোর মূল দায়িত্বে ছিলেন।

সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পরিচয় করে দিয়েছিলেন বাপ্পাদিত্যই। কারণ, টলিপাড়ার সঙ্গেও বাপ্পাদিত্যর ভালই যোগাযোগ ছিল। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন বাপ্পাদিত্য। তিনি দাবি করেছিলেন, অর্পিতার সঙ্গে মেলামেশা না করার ব্যাপারে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সতর্ক করেছিলেন তিনি।

তা ছাড়া পার্থ গ্রেফতারের পর বাপ্পাদিত্য সংবাদমাধ্যমে এও বলেছিলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে এত জঘন্য কাজ করেছেন তা কল্পনাও করতে পারছেন না তিনি। তাঁর ছোট মেয়ে রয়েছে। তাঁর কাছেও মুখ দেখাতে পারছেন না।”

কিন্তু সিবিআই সূত্রের মতে, পার্থ ও বাপ্পাদিত্যর যোগাযোগ এবং সম্পর্ক এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিল যে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর খুঁটিনাটি তিনি জানতেন। পার্থর বিশ্বস্তও ছিলেন। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাপ্পাদিত্যর নাম নতুন করে উঠে এসেছে। সেই কারণেই তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চলছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *