( আপডেট ) শিশুকন্যার রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য পাণ্ডবেশ্বরে

দুর্গাপুর, ১৪ নভেম্বর (হি. স.) বাড়ির চারপাশে পড়ে কাড়ি কাড়ি নোট। গৃহস্থের বাড়িতে চুরি! মা’য়ের কাছে শুয়ে থাকা শিশুকণ্যা রহস্যজনকভাবে উধাও। কুঁয়োয় উদ্ধার হল নিখোঁজ শিশুর মৃতদেহ। সোমবার রাত্রে ঘটনাকে ঘিরে বিস্তর চাঞ্চল্য যেমন ছড়িয়েছে। তেমনই রহস্যের দাঁনা বেঁধেছে পান্ডবেশ্বরপর কোন্দা গ্রামে। ডগ স্কোয়াড নিয়ে তদন্ত শুরু করল কমিশনারেট পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃতা শিশুকণ্যার নাম বর্ষা গোস্বামী (৬), তার বাবা বাপি গোস্বামী পেশায় ডাক বিভাগের ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের এজেন্ট। তাদের বাড়ী পান্ডবেশ্বরের বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের কোন্দা গ্রামের উপর পাড়ায়। সোমবার রাত্রে পার্শ্ববর্তী বালিজুড়ি গ্রামে ভাই, ভাতৃবধু ও ভাগ্নেকে নিয়ে বিসর্জন দেখতে গিয়েছিলেন বাপি গোস্বামী। তিনি জানান,” রাত ১০ টা নাগাদ কালী প্রতিমার বিসর্জন দেখতে বালিজুরি গ্রামে গিয়েছিলাম। বাড়িতে স্ত্রী ৬ বছরের মেয়ে বর্ষা ছাড়াও সেই সময় বাড়িতে ছিলেন বৃদ্ধ বাবা-মা। বিসর্জন দেখে বাড়ি ফেরার পথে খবর পাই বাড়িতে চুরি হয়েছে। মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়ি ফিরে দেখি আলমারি খোলা,বাড়ির জিনিসপত্র সব ছড়ানো ছিটানো, আলমারিতে রাখা গ্রাহকদের পোস্ট অফিসের পাশ বই, টাকা পয়সা লোপাট।” খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পাড়া প্রতিবেশীরা। মেয়েকে খোঁজাখুজি করতে বাড়ির আশপাশে নজরে পড়ে ডাকঘরের পাশবই, ছড়িয়ে ছিটিয়ে নগদ টাকা। তারপরই নজরে পড়ে বাড়ীর কুঁয়োতে শিশুকণ্যার মৃতদেহ ভাসছে। ততক্ষনে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পান্ডবেশ্বর থানার পুলিশ। ও দমকল কর্মীরা। কুঁয়ো থেকে উদ্ধার করা হয় মৃতদেহ। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশ ময়নাতদন্ত প্রথমিকভাবে জানতে পেরেছে জলে ডুবে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।

যদিও পরিবারের দাবি, দুস্কৃতীরা পরিকল্পনা করে চুরি করতে ঢুকেছিল। আলমারি খুলতেই শিশুকন্যা টের পেয়ে উঠে যায়। হয়তো প্রমান লোপাট করতেই তাকে খুন করে কুঁয়োয় ফেলে চম্পট দিয়েছে দুস্কৃতীরা। মৃত শিশুর মা সন্ধ্যা গোস্বামী জানান,” আমার স্বামী, দেওয়র, জা সবাই বিসর্জন দেখতে গিয়েছিল। বাড়িতে আমার রুমে ছোটো ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ ঘুম ভাঙতেই দেখি মেয়ে নেই, মশারী কাটা। তারপরই শ্বশুর শ্বাশুড়িকে ডাকি। বাড়ির ভেতর দেখি আলমারি লন্ডভন্ড। জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। বাইরে উঠোনে টাকা, পাশবই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে।”
এদিকে রাতেই খবর পেয়ে আসেন এলাকার বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন,খুব মর্মান্তিক ঘটনা। পুলিশ তদন্ত করছে।” এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, রাত্রে স্বামী দেওয়র সহ অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরা না থাকা স্বত্ত্বেও কেন দরজা ভেজানো ছিল? আলমারির তালা খুলে কিম্বা তালা ভেঙে সর্বস্ব লুট করল, অথচ রুমের ভেতর বড়রা কেউ টের পেল না? এমনকি পাশে থাকে মেয়েকে তুলে নিয়ে গেল, তাতেও টের পেল না মা?

যদিও মঙ্গলবার ডগ্ স্কোয়াড নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কিন্তু, তদন্তকারী কুকুর বাড়ির ভেতর ছাড়া বাইরে বেরোইনি। প্রশ্ন, তাহলে কি সরষের মধ্যে ভুত লুকিয়ে রয়েছে? আর তাতেই গোটা ঘটনায় বিস্তর রহস্যের দানা বেঁধেছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, “গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *