নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ নভেম্বর : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার ঝাড়খন্ড থেকে দেশব্যাপী বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার সূচনা করবেন। বিরসা মুন্ডার ১৪৮ তম জন্ম দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার দেশব্যাপী এই কর্মসূচির সূচনা হবে। সারা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও এই কর্মসূচির সূচনা করা হবে আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন থেকে।
এই কর্মসূচির পাশাপাশি এদিন জনজাতীয় গৌরব দিবস এবং প্রতি ঘরে সুশাসন ২:০ অভিযানেরও আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে। আজ সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এ কথা জানিয়েছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটনমন্ত্রী আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রে সরকার গঠন হওয়ার পর অনেক জনকল্যাণমুখী প্রকল্প ও পরিষেবা চালু করা হয়েছে। এ সমস্ত প্রকল্প ও পরিষেবাগুলি রাজ্যের প্রান্তিক জনপদের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এবং যারা এখনও এই সমস্ত প্রকল্প ও পরিষেবার আওতায় আসেননি তাদেরকে এ সমস্ত প্রকল্প ও পরিষেবার আওতায় নিয়ে আসার জন্য বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার সূচনা করা হবে। আগামীকাল হচ্ছে ভগবান বিরসা মুন্ডার ১৪৮তম জন্মদিবস। দেশব্যাপী এই দিবস জনজাতীয় গৌরব দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আমাদের রাজ্যেও এই দিবস বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপন করা হবে।
পর্যটনমন্ত্রী জানান, গত বছরের মতো এবারও প্রতি ঘরে সুশাসন ২০ অভিযানে রাজ্যের প্রান্তিক জনপদের মানুষের কাছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবার সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হবে। পর্যটনমন্ত্রী জানান, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা কর্মসূচিকে রাজ্যে সফল করে তুলতে রাজ্যস্তরে মুখ্যসচিব ও জেলাস্তরে জেলাশাসকদের চেয়ারম্যান করে কমিটি গড়া হয়েছে।
তাছাড়াও ৭ জন আইএএস অফিসারকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা কর্মসূচির মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবেন। তাছাড়া রাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও বিভিন্ন জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে আমাদের রাজ্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে। রাজ্যের প্রতিটি অংশের মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতি ঘরে সুশাসন ২০ অভিযান সফল হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, আগামীকাল রাজ্য সরকারের উদ্যোগে জনজাতি গৌরব দিবস, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা এবং প্রতি ঘরে সুশাসন ২.০-র এই তিনটি কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে। আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে ৩ দিনব্যাপী জনজাতি গৌরব দিবস উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি যেমন, স্বসহায়ক দলের উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনী, আলোচনাচক্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি আগামীকাল থেকেই বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতি ঘরে সুশাসন ২.০ কর্মসূচি একই সঙ্গে চলবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব জানান, প্রতি ঘরে সুশাসন ২.০ অভিযান উপলক্ষে গ্রামস্তরে, ভিলেজ কমিটি স্তরে, ব্লক স্তরে এবং জেলাস্তরে শিবিরের আয়োজন করা হবে। এই শিবিরগুলিতে জনগণকে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের তাৎক্ষণিক সুবিধা প্রদান করা হবে। এছাড়া যে সমস্ত প্রকল্পের তাৎক্ষণিক সুবিধা প্রধান করা অসম্ভব হবে না তা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার পর প্রদান করা হবে। প্রতি ঘরে সুশাসন ২০ অভিযান কিভাবে হচ্ছে তারজন্য প্রতিটি জেলা থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করা হবে। পরবর্তীতে এই রিপোর্টের মূল্যায়ন করা হবে এবং যারা ভালো কাজ করবে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।
প্রতি ঘরে সুশাসন ও বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রাকে সফল করার লক্ষ্যে রাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিভিন্ন জেলার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এরমধ্যে পশ্চিম জেলার দায়িত্বে থাকবেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার জন্য অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়, খোয়াই জেলার জন্য জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, উত্তর ত্রিপুরা জেলার জন্য শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা, গোমতী জেলার জন্য সমবায়মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, সিপাহীজলা জেলার জন্য পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, ঊনকোটি জেলার জন্য ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায় এবং ধলাই জেলার জন্য তপশিলি জাতি কল্যাণমন্ত্রী সুধাংশু দাসকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও মূল্যায়নের জন্য বিভিন্ন দপ্তরের ৮ জন সচিবকে ৮টি জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য সচিব ড: প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী।