নয়াদিল্লী, ২৫ অক্টোবর: প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং ২৪ অক্টোবর অরুণাচল প্রদেশে সশস্ত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী পোস্টগুলি পরিদর্শন করেন এবং সেখানে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল প্রস্তুতির মূল্যায়ন করেন। তিনি বাস্তবিক নিয়ন্ত্রণ রেখা (এল এ সি)র অগ্রবর্তী পোস্টগুলিতে মোতায়েন সেনাদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং তাদের সাথে “দশেরা” উদযাপন করেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সীমান্ত সেনাদের অদম্য চেতনা, অটল প্রতিশ্রুতি এবং অতুলনীয় সাহসের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন, যারা কঠিন পরিস্থিতিতে সীমান্তে মোতায়েন থেকে জাতি এবং জনগণের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন সমগ্র জাতি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গর্বিত এবং তাদের পাশে রয়েছে।
শ্রী রাজনাথ সিং তাওয়াং-এ সেনাবাহিনীর সাথে শাস্ত্র পূজা করেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি জোর দিয়ে বলেন দশেরা অশুভের উপর শুভ জয়ের প্রতীক। ভারতের সাহসী সশস্ত্র বাহিনীর ন্যায়পরায়ণতাকে বিজয়া দশমী উৎসবের নৈতিক শিক্ষার জীবন্ত প্রমাণ হিসেবে তিনি বর্ণনা করেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়ে বললেন সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্ব এবং অঙ্গীকারের কারণে আজ আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে আর তাই ভারত আজ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। তার সাম্প্রতিক ইতালি সফরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন যে তিনি মন্টোন স্মৃতিসৌধ (পেরুজিয়া প্রদেশ) পরিদর্শন করেছেন যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মন্টোনকে মুক্ত করার জন্য ইতালীয় অভিযানে লড়াই করা নায়েক যশবন্ত ঘাড়গে এবং অন্যান্য ভারতীয় সৈন্যদের অবদানকে সম্মান জানিয়ে নির্মিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন যে, কেবল ভারতীয়রা নয়, এমনকি ইতালিয় লোকেরাও এই স্মৃতিসৌধের সামনে তাদের শ্রদ্ধা জানায়, এর থেকে প্রমান হয় যে ভারতীয় সৈন্যদের সাহসিকতা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।
আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী সিং দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের সামরিক শক্তিকে শক্তিশালী করতে সরকার সবরকমের পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে, ভারত প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা অর্জনের পথে বিশাল অগ্রগতি করেছে। আগে আমরা আমাদের সামরিক বাহিনীকে উন্নত করতে আমদানির উপর নির্ভর করতাম। কিন্তু আজ দেশের মধ্যেই বেশ ভালো সংখ্যক বৃহদাকার অস্ত্র এবং প্লাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। বিদেশি কোম্পানিগুলিকে তাদের প্রযুক্তি হস্তান্তরকরতে এবং দেশীয় নির্মাতাদের সাথে ভারতে যন্ত্রপাতি উৎপাদন করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
২০১৪ সালে প্রতিরক্ষা রপ্তানির মূল্য ছিল প্রায় এক হাজার কোটি টাকা, কিন্তু আজ আমরা হাজার কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানি করছি’। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তাওয়াং যুদ্ধ স্মৃতিসৌধও পরিদর্শন করেন এবং ১৯৬২ সালের যুদ্ধে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী সাহসী বীর জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। তাঁর সাথে ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে; জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ (জিওসি-ইন-চিফ) ইস্টার্ন কমান্ড লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর পি কলিতা; জিওসি, ৪ কোপস লেফটেন্যান্ট জেনারেল মণীশ এরি এবং ভারতীয় সেনার অন্য বরিষ্ঠ আধিকারিকগণ।
শ্রী রাজনাথ সিং আসামের তেজপুরে ৪ কোপস প্রধান কার্যালয়েরও পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন কালে তিনি দেশের সুদূর পূর্বাঞ্চলে মোতায়েন গঠনের অপারেশনাল প্রস্তুতির পর্যালোচনা করেন। রক্ষা মন্ত্রীকে এল এ সি বরাবর পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং প্রথম সারিতে মোতায়েন সৈন্যদের অপারেশনাল দক্ষতা বাড়ানোর জন্য অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির কর্মসংস্থান সম্পর্কে অবহিত করা হয়। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ পরিস্থিতিতে বাহিনীর সমস্ত পদমর্যাদার সেনাদের দুর্দান্ত কৃতিত্ব এবং সেবামূলক পরিষেবার প্রশংসা করেন।

