।। স্নিগ্ধা দাস ।।
করিমগঞ্জ (অসম), ২২ অক্টোবর (হি.স.) : ঐতিহ্যের আরেক নাম রামকৃষ্ণ মিশন৷ স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, ত্রাণ, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনে এই প্রতিষ্ঠান অদ্বিতীয়। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, সারদা দেবী, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মতিথি, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদ্যাপন করে থাকে রামকৃষ্ণ মিশন। করিমগঞ্জে রামকৃষ্ণ মিশন স্থাপিত হয়েছে ১০৭ বছর আগে। দীর্ঘ প্রায় ৭২ বছর থেকে এই মিশনে পূজিতা হচ্ছেন দেবী দুর্গা মা। এবারও আয়োজনে কোনও খামতি নেই।
রাজসিক, তামসিক, আলোর ঝলকানি, আধুনিকতাকে দূরে রেখে সম্পূর্ণ সাত্ত্বিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে এবারও করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনে পূজিতা হচ্ছেন দেবী দুর্গা। মহাষ্টমীতে ভক্তের ঢল নেমেছে করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনে। শহরে বেশ কয়েকটি বিগ বাজেটের পুজো থাকলেও সকলের আকর্ষণের কেন্দ্র রামকৃষ্ণ মিশনের পুজো। আনন্দোৎসব বলতে ভক্তকুল মায়ের আবির্ভাব উপলব্ধি করেন এখানে। মৃণ্ময়ী মা সন্ন্যাসী ও ভক্তদের ভাবে হয়ে ওঠেন চিন্ময়ী। ভক্তিভাবই এই পূজার মূল মন্ত্র।
মায়ের পুজোর সমস্ত নিয়মকানুনও বেলুড় মঠের বিধান অনুযায়ী হয়। বেলুড় মঠের মতো এখানেও সংকল্প করা হয় সারদা মায়ের নামে। তত্ত্বাবধানে রয়েছেন করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী প্রভাসানন্দজি মহারাজ। মহোৎসবের সময় এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে নারায়ণকে। শহরের টাউন কালীবাড়ির শালগ্রামশিলা পূজিত হচ্ছেন দেবীর সঙ্গে। তবে মা দুর্গাকে আমিষ ভোগ প্রদান করা হলেও নারায়ণ ঠাকুরকে নিরামিষ ভোগ নিবেদন করা হয়ে থাকে পুজোর কয়দিন।
করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী প্রভাসানন্দজি মহারাজের তত্ত্বাবধানে গোটা উৎসব থাকলেও অঞ্জলি প্রদান সহ ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন স্বামী রামভদ্রানন্দজি মহারাজ। ঠাকুরের পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন কাশিষ চৈতন্য। আর বাদবাকি দায়িত্বগুলি সমঝানো হয়েছে ব্রহ্মচারীদের। পূজা উপলক্ষ্যে করিমগঞ্জ মিশনে এসেছেন রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড় মঠের অছি পরিষদের সদস্য তথা অরুণাচল প্রদেশের নরোত্তমনগর রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী অচ্যুতেশানন্দজি মহারাজ এবং স্বামী ইন্দ্রনাথানন্দজি মহারাজ। ভক্তদের মধ্য থেকে পুরুষ, মহিলা মিলে প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রয়েছেন এবারের পুজোয়।
বোধনের দিন থেকে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়েছে রামকৃষ্ণ মিশনে। মহাষ্টমীতে যেন জনজোয়ার। ভিড় সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে মহারাজ সহ স্বেচ্ছাসেবকদের। করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী প্রভাসানন্দজি মহারাজ বলেন, সাত্ত্বিকতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে এখানকার দুর্গাপূজায়। তিনি বলেন, পূজার কয়েকদিন মিলে ৩০ হাজারের বেশি ভক্ত সমাগম হবে। অঞ্জলি প্রদানের পর থেকে রাত ১০টা অবধি ভক্তদের মধ্যে ফল, মিষ্টি, মিষ্টান্ন সহ মহাপ্রসাদ ক্রমান্বয়ে বিতরণ করা হচ্ছে এবং হবে।