BRAKING NEWS

জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১৪ অক্টোবর : জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। ইতিহাস না জানলে সামনের দিকে যাওয়া যায় না। আমরা অতীত ও বর্তমানকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় জিবিপি হাসপাতাল হচ্ছে আস্থার জায়গা। মানুষ নার্সিং হোমে গেলেও জিবিপি হাসপাতালকেই আস্থার জায়গা হিসাবে মনে করেন। আজ দুপুরে জিবিপি হাসপাতালের ৬৩তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জিবিপি হাসপাতালের ৫টি নতুন পরিষেবার ফলক উন্মোচন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে যে পাঁচটি পরিষেবা চালু হয়েছে সেগুলি হল নবনির্মিত সুপার স্পেশালিটি ব্লক, জেরিয়াট্রিক ওয়ার্ড, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড-২, নতুনভাবে সংস্কার করা পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ড এবং সম্প্রসারিত ডায়ালেসিস ইউনিট।

মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আজ জিবিপি হাসপাতালের কে এল এস অডিটোরিয়ামে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনের সূচনা করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব সন্দীপ এস রাঠোর ও অন্যান্য অতিথিগণ। জিবিপি হাসপাতালের অতীত দিনগুলির স্মৃতিচারণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। এবারের বাজেটেও স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামোর উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের বৃহত্তম স্বাস্থ্য যোজনা আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মতো ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগা যোজনা চালু করা হয়েছে। এই যোজনায় দ্রুত কার্ড প্রদানের জন্য দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জিবিপি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ও পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের লক্ষ্য রাজ্যের জনসাধারণ যাতে এই হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পেতে পারেন।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জিবিপি হাসপাতালের পরিষেবা কোন অংশেই কম নয়। এই হাসপাতালের একটা সুখ্যাতি রয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জিবিপি হাসপাতালে যুদ্ধে আহতদের চিকিৎসার কথা স্মরণীয় হয়ে আছে। হাসপাতালের জায়গা দান করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরার মহারাজা কিরিট বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের মহতি উদ্যোগের কথাও স্মরণ করেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে সাম্প্রতিক কয়েকটি পদক্ষেপের উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের ৪/৫ মাস সময়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে সরকারি ডেন্টাল কলেজ চালু হয়েছে। নার্সিং কলেজ চালু করা হয়েছে। রাজ্য বাজেটে ১০০টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র খোলার সংস্থান রাখা হয়েছে। সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে ৫৩ কোটি টাকা বাজেটে রাখা হয়েছে। ৮ জেলায় নেশামুক্ত কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য থেকে রেফার কেইস কমে গেছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তার অতীত স্মৃতির কথা উল্লেখ করে বলেন, জিবিপি হাসপাতালে এলে মনে হয় “ঘরে এসেছি”। এই হাসপাতালের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের অবদানের কথাও মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব সন্দীপ এস রাঠোর, জিবি হাসপাতালের সুপার ডা. শঙ্কর চক্রবর্তী, এজিএমসি’র প্রিন্সিপাল ডা. অনুপ দাস, ভাইস প্রিন্সিপাল ডা. সঞ্জীব দেববর্মা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডা. জয়ন্ত রায়। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির সচিব ডা. কনক চৌধুরী। জিবিপি হাসপাতালের ডায়ালেসিস ইউনিটের জন্য আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে ১৪টি ডায়ালেসিস মেশিন দেওয়া হয়েছে। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ম্যানেজার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্টদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সুপ্রিয় মধ পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, স্বাস্থ্য শিক্ষা ত এইচ পি শৰ্মা প্রমুখ। এছাড়াও জিবিপি হাসপাতালের প্রবীণ চিকিৎসকগণও এদিনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *