আগরতলা, ১ অক্টোবর : সুর সম্রাট কুমার শচীন দেববর্মণ ভারতবর্ষে ত্রিপুরার মুখ উজ্জ্বল করেছেন। তিনি ছিলেন কালজয়ী শিল্পী, পরিচালক ও সুরকার। তাঁর সংগীত আজও আমাদের মনে এক অদ্ভূত অনুভূতির সৃষ্টি করে। আজ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গণে সুর সম্রাট কুমার শচীন দেববর্মণের ১১৭তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এই শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের আয়জন করে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, শিল্পী শচীন দেববর্মণ ত্রিপুরার গ্রাম, পাহাড়, নদী ও প্রকৃতি থেকেই তাঁর সৃষ্টির প্রেরণা পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, শচীন দেববর্মণ সংগীতের জগতে রাজ্যের জন্য অনেক অবদান রেখে গেছেন। যা বর্তমান প্রজন্মের শিল্পীদের চলার পথ মসৃণ করেছে। তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যের শিল্পীদের মধ্যেও প্রতিভার অভাব নেই। রাজ্যের সংস্কৃতি ও সংগীত জগতে জনজাতি সম্প্রদায়ের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও পরম্পরার এক বহমান ধারা রয়েছে। জনজাতিদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিকাশে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, কিংবদন্তী শিল্পী কুমার শচীন দেববর্মণ বাংলা ও ত্রিপুরার পল্লীগীতিকে আন্তর্জাতিকস্তরে পৌঁছে দিয়েছেন। বর্তমান সরকার রাজ্যে তাঁর মর্মর মূর্তি স্থাপন করে তার প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করেছে। যা আগে হয়নি। তিনি বলেন, শিল্পী কুমার শচীন দেববর্মণ ত্রিপুরা থেকে কখনই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেননি। সুর সম্রাট শচীন দেববর্মণের সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিল শিলং-এ। শচীন দেববর্মণ বলতেন, তিনি ত্রিপুরা থেকেই সব শিখেছেন। তাঁর সৃষ্টিতে ত্রিপুরার মাটির সুর জড়িয়ে আছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, শচীন দেববর্মণের সৃষ্টি অদ্বিতীয় ও ভিন্ন ধরণের। তিনি কলকাতা থেকে মুম্বাই গিয়ে বাংলা, হিন্দি ও লোকসংগীতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ভারত সরকার কুমিল্লাস্থিত তাঁর পৈতৃক বাড়িটিকে একটি মিউজিয়াম গড়ার প্রচেষ্টা নিয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠান শুরুর আগে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ কুমার শচীন দেববর্মণের মূর্তিতে পুস্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোসাইটি ফর ম্যানেজমেন্ট অব কালচারাল কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান নবেন্দু ভট্টাচার্য। শ্রদ্ধাঞ্জলী অনুষ্ঠানে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।