কলকাতা, ১২ সেপ্টেম্বর (হি স)। উপাচার্য নিয়োগ বিল নিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে মামলায় রাজভবনের কাছে হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।
আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে রাজভবনকে হলফনামা দিতে নির্দেশ বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চের। ১৬ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
মঙ্গলবার কেন্দ্রের আইনজীবীর উদ্দেশে ডিভিশন বেঞ্চ বলে, যদি সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হয় তাহলেও কি আদালত রাজ্যপালকে কোনও একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার অনুরোধ জানাতে পারে না? ডানদিক কিংবা বামদিক বা কেন্দ্রে হোক, কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার অনুরোধ রাজ্যপালকে আদালত জানাতে পারে না? আমরা জানি, এই ধরনের সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিদের কৈফিয়ত তলব বা সময় বেঁধে দেওয়া যায় না। কিন্তু যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধও কি আদালত করতে পারে না?
এর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের আইনজীবী বলেন, সংবিধান রাজ্যপাল সহ একাধিক সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিকে রক্ষাকবচ দিয়েছে। তাঁরা জবাবদিহি করতে বাধ্য নন। মামলাকারীর রাজনৈতিক পরিচয় খতিয়ে দেখা হোক। তিনি একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক। এই পরিচয় গোপন করে তিনি মামলা করেছেন। তাই এই মামলা গ্রহণযোগ্য নয়।
আবেদনকারীর আইনজীবী বলেন, একটি বিল তাঁর কাছে যাওয়ার পরে রাজ্যপাল তিনটি কাজ করতে পারেন। প্রথমত, তিনি বিলে সম্মতি জানিয়ে সই করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, তিনি পরামর্শ দিয়ে বা না দিয়ে পুনরায় বিবেচনার জন্য বিধানসভায় ফেরত পাঠাতে পারেন এবং তৃতীয়ত, তিনি বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে রাজ্যপাল কোনওটিই করেননি।
প্রসঙ্গত, উপাচার্য নিয়োগ বিল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন না রাজ্যপাল, এমনটাই অভিযোগ রাজ্য সরকারের। বিধানসভায় এবং রাজ্য মন্ত্রিসভায় সেটি পাশ হওয়ার পরে ২০২২ সালের ১৫ জুন এই বিল রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত রাজ্যপাল ওই বিল নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। এই অভিযোগ সামনে রেখেই রাজ্যাপালের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়।