নয়াদিল্লি, ২৩ আগস্ট (হি. স.) : চাঁদে সফল অবতরণ চন্দ্রযান ৩-এর । সারা দেশের যাবতীয় প্রার্থনা সার্থক হল। ইতিহাস গড়ল ভারত। অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । তিনি বললেন, মিশনের সাফল্যই সমগ্র মানবজাতির সাফল্য।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণ দেখার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে লাইভ স্ট্রিমে ইসরোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে ব্রাজিল, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও চিনের নেতাদের সঙ্গে ব্রিকস রাজনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে জোহানেসবার্গে রয়েছেন মোদী। চন্দ্রযান-৩-এর সফল অভিযানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ইসরো এবং দেশের বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার প্রিয় পরিবার, যখন আমাদের চোখের সামনে এইরকম ইতিহাস গড়তে দেখলাম, তখন জীবন ধন্য হয়ে গেল। এরকম ঐতিহাসিক ঘটনা রাষ্ট্রজীবনের চিরঞ্জীব চেতনায় রূপ পায়। এটি একটি অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। এই সফলতাই মূলত যাবতীয় মুশকিলের মহাসাগরকে পার করে নিয়ে যাবে।আজকে আমরা নতুন ভারতের নয়া উড়ানের সাক্ষী হলাম।’
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “আজ আমরা মহাকাশে নিউ ইন্ডিয়ার নতুন উড়ানের সাক্ষী হয়েছি। প্রতিটি ঘরে ঘরে উৎসব শুরু হয়েছে। আমার হৃদয় থেকে, আমি আমার দেশবাসী, আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এই উৎসাহ ও উচ্ছ্বাসে যুক্ত আছি। আমি চন্দ্রযান টিম, ইসরো এবং দেশের সমস্ত বিজ্ঞানীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই, যাঁরা এই মুহূর্তের জন্য এত বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আমাদের বিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রমের ফলে ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছে, যেখানে পৃথিবীর কোনও দেশ আজ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। আজ থেকে বদলে যাবে চাঁদ সংক্রান্ত প্রচলিত সব ধারণা, বদলে যাবে কাহিনিও। নতুন প্রদন্মের জন্য প্রবাদও বদলে যাবে। ভারতে আমরা সবাই পৃথিবীকে মা এবং চাঁদকে মামা বলে ডাকি। এক সময় বলা হতো চাঁদ মামা অনেক দূরে আছে। একদিন এমনও আসবে, যখন ছেলেমেয়েরা বলবে চাঁদ মামা শুধু ট্যুরে আছে।
প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভিত্তি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, এই দিনটিকে দেশ চিরদিন মনে রাখবে। এই দিনটি আমাদের সকলকে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করুক। পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে কীভাবে বিজয় অর্জিত হয় তারই প্রতীক এই দিনটি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রম ও প্রতিভার কারণে ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছে, যেখানে পৃথিবীর কোনো দেশ আজ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি।
প্রসঙ্গত, চন্দ্র অভিযানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাফল্যের পর চতুর্থ দেশ হিসেবে তালিকায় নাম লিখিয়েছে ভারত। চাঁদের মাটি স্পর্শ করা ঐতিহাসিক মুহূর্তটি উদযাপন করতে উৎসুক ভারতীয় জনতা সমবেত হয়েছে। ইসরোর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে পুরো ঘটনা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
চন্দ্রযান-৩ মিশনটি ১৪ জুলাই শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে থাকা ল্যান্ডার বিক্রম প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার বেগে চাঁদের পৃষ্ঠের দিকে নামতে থাকে। এর আগে ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ মিশন পাঠিয়েছিল ভারত তবে তা ব্যর্থ হয়। ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরো বলেছে, কোনো সমস্যা ছাড়াই যানটি সফলভাবে অবতরণ করবে। চন্দ্রযান-২ এর মিশনের ব্যর্থতা থেকে তারা শিক্ষা নিয়ে নতুনভাবে এই চন্দ্রযান-৩ পাঠিয়েছে।