কলকাতা, ১৩ জুলাই (হি. স.) : পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রাণহানি নিয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রীকে নিশান করলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সকালে নিউটাউনের ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে দিলীপবাবু বলেন, উনি সব দেখতে পান না, শুনতে পান না। যতটা দৃষ্টি বা বোঝার ক্ষমতা, ততটাই বলছেন। বাস্তব যেটা, যেটা মিডিয়া তুলে ধরছে। সেটা তো অস্বীকার করা যাবে না।
এখনও পর্যন্ত অসমর্থিত ভাবে মৃত ৪৭, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ১৯। উনি কাল বলেছেন, আমার কি দোষ? সর্বত্র তাদের পুলিশ প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। প্রশাসনের ব্যর্থতায় লোকজন খুন হচ্ছে, মরছে, তবুও সে বলে আমার দোষ কি? ৪৭ জন মরে যাওয়ার পরেও যদি দোষ দেখতে না পান, বা অনুভব করতে না পারেন তাঁর কী ত্রুটি, তাহলে তো আমরা ভগবান ভরসায় বেঁচে আছি। এমন লোককে দায়িত্ব দিয়েছি যার চোখ নেই, কান নেই, কিছু বুঝতেও পারেন না। নিজের দোষ ছাড়া আর সব দেখতে পান। এরকম লোকের কাছে আর কিছু আশা করা যায় না।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে রাবার স্ট্যাম্প হিসাবে বর্ণনা করে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, শাসক দলের লোকদের ইশারায় তিনি নাচতে পারেন তাই তাকে কমিশনার করা হয়েছিল। এই কমিশনার যখন থেকে নিযুক্ত, তবে থেকেই বিতর্কে। আর নিয়মিত আদালতের ধমক খেয়ে যাচ্ছেন। তার কোনও পরিবর্তন নেই। উনি ভোটের আগে এবং ভোটের পরেও একইরকম আছেন। কথা বললে উত্তর না দিয়ে নির্বাক হয়ে যান। বোঝাই যাচ্ছে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে তাকে কমিশনার করা হয়েছিল সেটাই উনি করতে বাধ্য হয়েছেন। ওনার কোনও রোল ছিল না। উনি রাবার স্ট্যাম্প হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। যারা পরিচালনা করছেন, তারাও বলছেন, আমাদের কোনও দোষ নেই। প্রতিদিন আদালত তাকে ভর্ৎসনা করলেও সে আগের মতোই থেকে যায়।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও ভাঙড়ের অশান্তি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্বেও ভাঙড়ে অশান্তি হয়েছে। বাহিনীর যিনি প্রমুখ, তিনি আগেই বলেছেন, তাঁর কাছে স্পর্শকাতর বুথের লিস্ট ছিল না। কোথাও যেতেও বলা হয়নি। ওনারা নিজে থেকে কিছু জায়গায় গেছেন। এদের অনীহা ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীতে। তাই সেখানে পাঞ্জাব পুলিশ ছিল। পুলিশকে কেনা যায়, বেচা যায়। সেজন্যই হয়তো অন্য রাজ্য থেকে পুলিস এনে ওখানে বসানো হয়েছিল। তারা নির্বাক হয়ে ছিল। দর্শক হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিল। ভাবুন একবার! ৬২ হাজার বুথে ভোট। তারমধ্যে শুধু রাজভবনেই অভিযোগ সাড়ে ৭ হাজার। এরকম হাজার হাজার অভিযোগ কমিশনের কাছে বা বিডিওর কাছেও এসেছে। সুরাহা হয়নি। অভিযোগ স্বীকার করাও হয়নি। গণনার দিন বিডিওরা ফোন নামিয়ে রেখেছেন। ধরেন নি। বলেছেন ডিস্টার্ব করবেন না। ডিএম এর কাছে অভিযোগ এলে তারা বলেছে আমরা বিডিওকে বলে দিয়েছি। যা করার ওরা করবে। রি কাউন্টিং দেয়নি। আর ৮৫ ভোটে আমরা জিতেছি, সেখানে রি কাউন্টিং করে আমাদের হারিয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এটাই ওনার প্যাটার্ন। খুন করো, চাকরি দাও। যে টাকার থলি নিয়ে উনি বালাসোর গেছিলেন, সেটা কোথায় রেখে এলেন? উনি দেখছিলেন, লাস্ট স্কোর কত হচ্ছে? ৫০ পার হল কিনা? কেউ ওনার টাকা চায়না। স্বজন হারিয়ে কেউ টাকা চায়না। সবাই জীবনের সুরক্ষা চায়। জাস্টিস চায়। আমরা চাইনা কেউ মারা যাক, আর তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হোক।

